সায়ন ঘোষ, আমাদের ভারত, বনগাঁ, ৩১ মার্চ: লকডাউনের ফলে মিষ্টি দোকান থেকে চায়ের দোকান বন্ধ থাকায় চরম সংকটে পড়েছিল দুগ্ধ ব্যবসায়ী থেকে গোরু মোষ পালনকারীরা। বন্ধ হয়েছিল দুগ্ধ বিক্রি। ফলে গরু, মোষের খাদ্য যোগানের দায় হয়ে উঠেছিল উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা সহ অন্যান্য জেলার দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের।
এই জেলার বনগাঁ, বাগদা, হাবড়া, বসিরহাট সহ বেশ কিছু গ্রামের চিত্র একই রকম। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই গো মোষ পালন কারী দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে মিষ্টির দোকান খোলার নির্দেশ দিলে খুশির জোয়ার দেখা যায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
লকডাউনের ফলে হাবড়ার বেড়গুম, কৃষ্ণনগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটা বাড়িতে রয়েছে গোশালা বা গরুর খাটাল। কয়েকশো পরিবার গোপালন এবং দুধ বিক্রি করে সংসার চালান। যেখান থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার লিটার দুধ, ছানা, ঘি, পনির সরবরাহ হত জেলার গন্ডি ছাড়িয়ে শহর কলকাতায়। লকডাউনের ফলে সেই সব খামার মালিক দুগ্ধ ব্যবসায়ী ও গো-মোষ প্রতিপালকদের চোখে-মুখে চিন্তার ভাঁজ।
করোনা আতঙ্কে দুগ্ধ ব্যবসা ও গোরু-মোষ প্রতিপালন শিল্পে নেমে এসেছে সংকটের কালো মেঘ। কারণ দুধ যেমন বিক্রি হচ্ছে না তেমনই গরু ও মোষের খড় বিচুলির যোগান নেই পরিবহন বন্ধ থাকায়। গরু ও মোষের অস্তিত্ব সংকট এবং একইসাথে যুক্ত দুগ্ধ ব্যবসায়ীর জীবন জীবিকা সংকটে। গরু বা মোষের দুধ মূলত যে জায়গায় সরবরাহ হত সেই মিষ্টির দোকানপাট বন্ধ ছিল এতো দিন। ডেয়ারি দুধ নিচ্ছে না। মানুষ ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুধ কিনছে না। সর্বত্র সরবরাহ বন্ধ। দৈনিক কয়েকশো লিটার দুধ ফেলে দিচ্ছিলেন ব্যবসায়ীর। খামার বা খাটাল মালিকদের আয়ের উৎস বন্ধ। বাঁচানো দায় অবলা জীবদের। গরু- মোষ সহ অবলা জীবরা কাতর হয়ে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। গ্রামবাসীরা আর্জি জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গরু-মোষ সহ অবলা জীবদের খাদ্যের যোগান অব্যাহত রাখতে। তাঁরা বলছেন গরু মোষ গুলি না বাঁচলে তাঁদের আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে। সেই ডাকে সারা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিষ্টির দোকান খোলার অনুমতি দেয়। খুশি দুগ্ধ ব্যবসায়ীরা।