আমাদের ভারত, ৮ আগস্ট: বৃহস্পতিবার দুপুরে সংসদে ওয়াকফ বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। এটি সংখ্যালঘু মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হবে বলে জানাগেছে। সংশোধনের মূল লক্ষ্য হলো একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভক্তিকরণ নিয়ন্ত্রণ করা। আইন সংশোধন করার আগেই এটি নিয়ে সরব হয়েছিল বিরোধীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সংসদে ওয়াকফ বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী। প্রস্তাবিত সংশোধনীটি গ্রাহ্য হলে আইনটির নতুন নাম হবে ইউনিফাইড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট এমপাওয়ারমেন্ট এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যক্ট। এই বিলে পুরনো আইনটিতে
৪৪টি সংশোধনী আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে সংশোধনের মূল লক্ষ্য হলো একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তিকরণ নিয়ন্ত্রণ করা। এছাড়াও প্রস্তাবিত অন্যান্য সংশোধনগুলির মধ্যে রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলের পাশাপাশি প্রতি রাজ্যে ওয়াকফ বোর্ড গঠন। যেখানে মুসলিম মহিলা এবং অমুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
১৯৫৪ সালে প্রথম ওয়াকফ আইন পাস হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে সংশোধনী এনে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে সব ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকে বারবার প্রশ্ন উঠেছিল বোর্ডের একচ্ছত্র অধিকার নিয়ে। সরকারের যুক্তি, এবার বিষয়টিতে স্বচ্ছতা আনতে চলতি বিলে ৪৪টি সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।বর্তমানে ওয়াকফ আইনের ধারা ৪০ অনুযায়ী যে কোনো সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণা করার অধিকার ছিল ওয়াকফ বোর্ডের হাতে। বোর্ডের বিরুদ্ধে বারবার বহু গরিব মুসলিমদের সম্পত্তি ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের ব্যক্তি সম্পত্তি অধিগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই আকচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ কিনা সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে জেলা শাসক বা সমপদ মর্যাদার কোনো আধিকারিকের হাতে।
ওয়াকফ সংশোধনী অনুযায়ী নবগঠিত কেন্দ্রীয় ও ওয়াকফ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হবেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী। এছাড়া কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যেও আনা হবে রদবদল। নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কাউন্সিলে দু’জন অমুসলিম সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক। থাকবেন দু’জন মহিলা সদস্য।
পাশাপাশি রাজ্যগুলিতে শিয়া ওয়াকফ বোর্ড গঠন হবে তা শিয়া ওয়াকফ বোর্ড হলে সব সদস্য হবে শিয়া এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড হলে তাতে থাকবেন কেবল সুন্নিরা।
কিন্তু এই বিল সংশোধনী উত্থাপনের বিরুদ্ধে কংগ্রেস সাংসদকে নোটিশ দিয়েছে সি বেনুগোপাল এবং হিবি ইডেন। সংসদেও বারবার ভারতীয় সংবিধান উদ্ধৃত করে ভিন্ন ধর্মের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপে বিরোধিতা করেছেন তারা।
এই বিলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা মাত্রই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তাদের মতে হিন্দু মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দিতে এই বিতর্কিত বিল পেশ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সমাজবাদী পার্টির সংসদ অবধেশ প্রসাদ বলেছেন, বিলটি ওয়াকফ সম্পত্তি দখলের জন্য সরকারের একটি প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, বিলটি সংসদে পেশ হওয়ার সময় বিল সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান খোলসা করবে সমাজবাদী পার্টি। শিবসেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, জোটের সকলের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে তো?