হিংসামুক্ত বিধানসভা ভোটে প্রয়োজন বুঝে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী: নির্বাচন কমিশন

রাজেন রায়, কলকাতা, ২২ জানুয়ারি: রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কোনও খামতি থাকলে নির্বাচন ঘোষণার পরে সব রকম ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানানো হয়েছে। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা বলেন, রাজ্য পুলিশের সঙ্গে বিএসএফ এবং সিআরপিএফকে জুড়ে দেওয়ার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি আবেদন জানিয়েছে। বিস্তারিত খতিয়ে দেখে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অন্যদিকে রাজ্যের শাসক দলের প্রতিনিধি দাবি করেছিলেন, সীমান্তবর্তী গ্রামে গ্রামবাসীদের বিরোধী দলে ভোট দেওয়ার জন্য বিএসএফের তরফে ভয় দেখানো হচ্ছে। এই নিয়ে বিএসএফের আধিকারিক রিপোর্ট জমা দিয়ে সেই দাবি নস্যাৎ করেছেন। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “ভোটের কয়েক মাস আগে থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। পরিস্থিতি বুঝে দেওয়া হবে। অনেকেই দাবি করেছেন, একশো শতাংশ বুথে বাহিনী দিতে হবে। তা এখনও নির্ধারিত নয়। আমরা প্রয়োজনীয় বাহিনী দেব।”মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা করব। জেলা পর্যবেক্ষকদের নম্বর সবাইকে দেওয়া হবে। তাঁরা যে ফিড ব্যাক দেবেন, তারপর আমরা ভিসিট করব।”

সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আরও জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বাংলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করতে গেলে আরও কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। কোভিড প্রোটোকল মেনে যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করানো যায়, সেই বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা অতিমারির কারণে এবারে পোলিং বুথ সংখ্যা বাড়ানো হবে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে একুশের নির্বাচনকে মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রত্যেক বুথে ভোট দেবেন হাজার ভোটার, আগে তা ছিল দেড় হাজার। এরফলে বুথ বাড়বে ২২ হাজার। বাংলায় তিন জন পর্যবেক্ষক আসবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। একজন সাধারণ পর্যবেক্ষক, একজন ব্যয়সংক্রান্ত বিষয়টি দেখবেন, অপরজন নজরে রাখবেন আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি। বাংলায় ভোট ঘোষণা হলেই তিন জন পর্যবেক্ষক এসে পৌঁছবেন বলে জানানো হয়েছে।

একইসঙ্গে যে সমস্ত জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপার রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ বিভিন্ন জায়গায় বদলি পেয়েছেন, সে রকম কোনও অভিযোগ এলে নির্বাচন জারি হওয়ার পর তাদেরকেও সরিয়ে দেওয়া হবে। পেশিশক্তি বা অর্থ শক্তি দেখানো হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার, কালো টাকা ইত্যাদি অভিযোগ জমা পড়েছে। সেগুলি গুরুত্ব সহকারে মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যসচিব জানান, রাজ্য চুক্তিভিত্তিক সিভিক পুলিস ও গ্রিন পুলিসকে নিয়োগ করে। তবে কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তাঁদের কোনওভাবেই ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *