সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২৮ এপ্রিল: দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাতের ‘মরকজ’ অনুষ্ঠানে বাংলায় ফেরার পর চিহ্নিত করা হয়েছিল ১৭৩ জনকে। তারা সহ তাদের সংস্পর্শে আসা ১১৬ জনকে চিহ্নিত করে কলকাতার রাজারহাটের হজ হাউজে রাখা হয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত মোট কত জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছিল, সেই তথ্য সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। তাদের কোয়ারেন্টাইন সঠিকভাবে করোনা পরীক্ষা হয়েছে কি না, এবার সেই তথ্য জানতে চাইল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।
সূত্রের খবর, ১৪ দিন রাজারহাটের হজ হাউসে কোয়ারেন্টাইনে রাখার পর এ বার নিয়ম মত নিজামুদ্দিন ফেরতদের বাড়ি ফেরানো শুরু হয়েছে। শনিবার রাত থেকেই সরকারি বাসে চাপিয়ে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। কিন্তু কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় নিয়ম মতো করোনা পরীক্ষার টেস্ট করা হয়েছে কি? কারণ করোনা নিয়েই তারা ফিরে গেলে ফের আরও অনেককে সংক্রামিত করে ফেলতে পারেন।
পর্যবেক্ষকদলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্রের লেখা এই চিঠির শেষাংশে রাজ্য সরকারের কাছে দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ এবং কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। দু’পাতার চিঠিতে পর্যবেক্ষক দল হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে পরিদর্শনের পর বেশ কিছু বিষয়ে অসংলগ্নতার কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন, ডুমুরজলার কোয়ারেন্টাইনে ৭ দিন থাকার পর কেন নমুনা পরীক্ষা ? কেন বাজেয়াপ্ত চিকিৎসাধীনদের মোবাইল?
ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে ১১৮ শয্যার ওই কোয়ারেন্টাইনে কেন্দ্রে ৮০ জন রয়েছেন। ৭ দিন থাকার পর তাঁদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। তারপর ২-৩ দিনে রিপোর্ট আসছে। তাছাড়া রাজ্য সরকার আবাসিকদের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়ায় তাঁদের পরিবারের যাঁরা করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁদের খবর কীভাবে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগে আছেন আবাসিকরা।
করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে থাকা কোয়ারেন্টাইনের সদস্যরা তো জেলবন্দি আসামী নন । কী কারণে নিয়ে নেওয়া হচ্ছে তাঁদের মোবাইল? প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে নিজামুদ্দিন ফেরতদের নিয়ে যেন কোনও সামাজিক বিদ্বেষ না ছড়ায় এবং একই সঙ্গে সরকার যেন তথ্যের স্বচ্ছতা রাখে সেটাই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।