রাজেন রায়, কলকাতা, ১০ ডিসেম্বর: একইসঙ্গে শিল্প বন্ধু এবং কৃষক বন্ধু ইমেজ ধরে রাখতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী এবং শাসক দল। ধর্মতলায় কৃষি আইনের প্রতিবাদে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এদিন ছিল মুখ্যমন্ত্রীর পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। সভায় নিজের ২৬ দিনের অনশনের প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘কৃষকদের আন্দোলন থেকে আমরা সরব না।’’ একইসঙ্গে কৃষক আন্দোলন থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি সরকার যে যুদ্ধের হাওয়া তুলবে সেকথাও আগাম জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৭৩ লক্ষ চাষি কৃষকবন্ধু প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে চাষিদের টাকা দিই। আমরা এখানে কৃষকদের ফসল বিমা বিনা পয়সায় দিই। আর কেন্দ্রের এই নয়া কৃষি আইন কৃষক বিরোধী আইন, জনবিরোধী আইন। কৃষকদের ধান তুলে নিয়ে মজুতদারি করলে চলবে না। তিনটে আইনই প্রত্যাহার করতে হবে, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য থেকে আলু, পেঁয়াজকে বাদ দেওয়া যাবে না।
এরপরে নয়া সংসদ ভবন তৈরি করে অর্থ অপচয় হয়েছে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন সংসদ ভবন যা আছে, তাতেই চলে যেত। আমি মনে করি সংসদ ভবন তৈরির টাকা কৃষকদের দেওয়া উচিত ছিল। আমফানে এক টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই, বলছে হিসাব চাই। প্রত্যেকটা আন্দোলন বন্ধ করার জন্য ওরা চক্রান্ত করে রেখেছে। যখনই কোনও আন্দোলন হয়, তখনই বলে পাকিস্তান আক্রমণ করেছে। কৃষক আন্দোলন যাতে দানা বাঁধতে না পারে তার জন্য নাটক চলছে, পরিকল্পনা চলছে। দিল্লিতে এনআরসির সময় সংঘর্ষে কত জন মারা গিয়েছিল, আপনারা জানেন। সব কিনে নিয়েছে, আপনি কোনও কথা বলতে পারবেন না।
এদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার আক্রান্ত হওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, শিরাকোলে আমাদের একটা সভা ছিল, কিন্তু সময় পাল্টে পরে করা হয়েছে, ওখানে কিছু হয়নি।
আমি পুলিশকে বলেছি, তদন্ত করে দেখতে। আমি জানি না, কোথায় কী হয়েছে। আসলে ওদের সভায় লোক হয় না। তাই নিজেরাই নাটক করে ন্যাশনাল চ্যানেলে মুখ দেখায়। তোমরা রাজ্যকে জানাও না, আর যখন নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাও। আপনারা তো কেন্দ্র থেকে নিরাপত্তা নিয়ে আসেন, তা হলে আপনার গাড়িতে হামলা কী ভাবে হয়? একটা নেতার পিছনে ৫০টা গাড়ি কেন যাবে?’
বিজেপির বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে কোনও যোগ নেই বলে তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যাঁরা এমন মিথ্যে কথা বলেন, তাঁরা আমাকে নিয়েও বলতে পারে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাকি বিশ্বভারতীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এরা কেমন মিথ্যে কথা বলে ভাবুন। বাংলায় থেকে বাংলার বদনাম করেন, লজ্জা করে না। বাইরে থেকে গুন্ডা নিয়ে এসে গ্রামে গ্রামে ঘুরছে। একটা কথা মনে রাখবেন, ওরা কিন্তু আমাদের রাজ্যের দল নয়, বাইরের দল।’