“জনগণ যাকে সার্টিফিকেট দেবেন তিনিই প্রার্থী,” লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে হারে ওন্দায় অভিমানের সুর অভিষেকের

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১২ এপ্রিল: পঞ্চায়েত নির্বাচন দোর গোড়ায়। লোকসভা ও বিধানসভার মতোই পঞ্চায়েত ভোটে তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে আজ ওন্দার জনসভায় অভিমানের সুরে বক্তব্য রাখলেন অভিষেক।

২০১৯-এ বাঁকুড়ার মানুষ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন, তৃণমূল কিন্তু মুখ ফেরায়নি। আপনারা ২০২১ এও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ ফেরাননি। কিন্তু ২০২৪-এ যদি আপনারা তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন তাহলে আমরাও কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নেব। এটা আমি অভিমানের সঙ্গে বলে গেলাম। বুধবার বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেডিয়ামে ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা গায়ে মেখে কয়েক হাজার মানুষ যখন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড পঞ্চায়েত নির্বাচন ও মানুষের কর্মসংস্থান ও পরিষেবা নিয়ে কি বার্তা দেন তা শোনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন মঞ্চে এসে এই অভিমানের কথা বলে গেলেন সর্ব ভারতীয় দলের তকমা হারানো তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

এরপরই তিনি বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাস, সড়ক যোজনা সহ হাজার হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। সেই টাকা দিচ্ছে না ফিরিয়ে আনতে আমি ১ কোটি চিঠি নিয়ে দিল্লির কৃষি ভবনে বসবো। যতক্ষণ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি না পাবো ততক্ষণ বসে থাকবো। বাঁকুড়ার মানুষ তার সঙ্গে যাবেন তো। উপস্থিত জনতা হাত তুলে সমর্থন জানান। তখন তিনি বলেন, বাঁকুড়ায় ৮ লাখ ৫২ হাজার জব কার্ড রয়েছে।

আসন্ন ভোটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে খাল কেটে কুমির আনার মতো। ২০১৯-এ ভোট হয়েছিল বালাকোট ইস্যুতে, রামন্দিরের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জিতেছিল বিজেপি, এবার ধর্মের ভিত্তিতে ভোট হবে না, ভোট হবে উন্নয়নের ভিত্তিতে। তিনি উপস্থিত জনতাকে এক প্রকার হুঁশিয়ার করে বলেন, তৃণমূল জিতলে বাংলার মানুষ তার অধিকার পাবে, আর বিজেপি জিতলে বাংলার টাকা গুজরাট চলে যাবে। তিনি কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, সিপিএমের হার্মাদরা এখন বিজেপির জল্লাদ। একই সাথে তিনি বলেন, করোনার সময় মানুষ এলাকার বিজেপি সাংসদদের পায়নি, সেই সময় তৃণমূলের কর্মীরাই পাশে ছিলেন।

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে কি নির্দেশিকা দেন তা জানার জন্য আগ্ৰহ ছিল ছোটবড় সব কর্মীদের। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনাদের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে কাদের প্রার্থী করা হবে, দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি বলছি জনগণ যাকে সার্টিফিকেট দেবেন তিনিই প্রার্থী হবেন।

এদিন প্রচণ্ড দাবদাহ সত্ত্বেও সভাস্থলে ছিল উপচে পড়া ভিড়। সভায় ওন্দার প্রাক্তন বিধায়ক অরূপ খাঁ, জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র, রাজ্য সাধারণ সম্পাদিকা অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *