বাবা-মায়ের উপর অভিমান, পাটনা থেকে ট্রেনে চড়ে একাই আলিপুর চিড়িয়াখানায় বালক

আমাদের ভারত, কলকাতা, ২০ ডিসেম্বর: সোমবার আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে এক কিশোরকে ঘিরে হইচই পড়ে যায়। ছেলেটি একা চিড়িয়াখানায় ঢোকার চেষ্টা করছিল। পাটনা থেকে একা তিলোত্তমায় পা রেখেও স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল তার। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। তাকে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা চলছে।

করোনার ধাক্কা কিছুটা হলেও সামলে উঠেছেন প্রায় সকলেই। ধীরে ধীরে কাটছে আতঙ্ক। ঘরের কোণ থেকে বেরিয়ে শীতের রোদ্দুর গায়ে মেখে তিলোত্তমার ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। আর একবেলার ছুটি কাটানোর জন্য চিড়িয়াখানা সব সময়ই ভ্রমণ পিপাসুদের সেরা গন্তব্য। নিরাপত্তারক্ষীরা ভিড় সামাল দিতে অভ্যস্ত। তাঁরা সাধারণত দেখেন, বাবা-মা কিংবা বড়দের হাত ধরেই শিশুরা চিড়িয়াখানায় ভিড় জমাচ্ছে। তারা দেখে পরনে নীল সোয়েটার এবং সবুজ রংয়ের প্যান্ট পড়া ছোট্ট এক বালককে। চিড়িয়াখানায় প্রবেশের মুখে তাকে আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা।

একা কেন, সেই প্রশ্নের জবাবে বালকটি জানিয়ে দেয়, বাড়িতে বাবা-মা বকাবকি করেছিল। তাই মন ভাল নেই তার। অভিমানে পাটনা থেকে ট্রেনে চড়ে বসে। পৌঁছয় হাওড়া স্টেশন। হতে পারে সে পাটনার বাসিন্দা, তবুও কলকাতার চিড়িয়াখানার কথা শুনেছে। মনে মনে ভেবেছিল একদিন ঘুরতে যাবে। পাটনা থেকে হাওড়ায় পৌঁছে প্রথমেই চিড়িয়াখানায় যাওয়ার কথা মনে পড়ে।

পায়ে হেঁটে চিড়িয়াখানার উদ্দেশে রওনা দেয়। রাস্তায় খিদে পেয়ে যায়। খাবার চেয়েই খায়। তবে লক্ষ্যে অবিচল। পথচলতিদের জিজ্ঞাসা করে চিড়িয়াখানায় পৌঁছে যায়। ঢোকার মুখে পুলিশি বাধা। চিড়িয়াখানায় বাঘ, সিংহ আর দেখা হল না তার। রক্ষীরা সোজা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যায় তাকে। আধিকারিকরা পুরো বিষয়টি জানতে পারেন। শিশুটি সবিস্তারে পুরো ঘটনা জানায়।

চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত জানান, “বেলা ১২টা নাগাদ রক্ষীরা ছেলেটিকে আমার কাছে নিয়ে আসে। নাম বলে ফারহান। বলে পটনা স্টেশনের কাছে থাকি। কিন্তু ঠিকানা বলতে পারেনি। পটনায় পরিচিত একজনকে ওর ভিডিও পাঠিয়ে দিয়েছি। হ্যাম রেডিও খবর পেয়ে যোগাযোগ করে। এর পর ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় বালককে। পাটনা পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই ওকে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারব।” তবে বাড়ি আর ফিরতে চায়নি সে। কারণ একটাই, বাবা-মা নাকি বড্ড মারধর করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *