স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, ১৭ এপ্রিল:
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক রাজ্যের চারটি জেলাসহ গোটা দেশের ১৭০ টি জেলাকে বিশেষভাবে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। লকডাউন পালনে রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে। তখন রাজ্যেরই হটস্পট চিহ্নিত জেলা উত্তর ২৪ পরগনায় সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল আইন অমান্য, তোলাবাজি ও বোমাবাজির। রীতিমতন প্রশ্ন তুলেছে শাসকদলের ব্লক নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে। ঘটনাটি ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ ব্লকের মুরারিশা গ্রাম পঞ্চায়েত অন্তর্গত ভবানীপুর অঞ্চলে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, এলাকার ইঁটভাটার মালিকদের থেকে তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা। ভাটার মালিকরা তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তৈরি হয় আক্রোশ। আর সেই আক্রোশ থেকেই বোমাবাজি এবং বাইক বাহিনীর তান্ডব।
অভিযোগ, উত্তর ২৪ পরগনার শিক্ষার কর্মাধ্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজী ওরফে বাবু মাস্টার দলীয় পদ এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ইঁটভাটার মালিকদের প্রস্তাব দেয় লকডাউন চলাকালীন ইঁটভাটা চালুর সব ব্যবস্থা তিনি করবেন। তার বদলে তাকে প্রতিভাটা থেকে নগদ দু লক্ষ টাকা, ৫ হাজার ইঁট, প্রতি শ্রমিকের আড়াই হাজার টাকা মজুরি বৃদ্ধি এবং সেই সাথে প্রতিটি ভাটায় অন্তত পাঁচজন করে তৃণমূল কর্মীদের নিয়োগ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রস্তাবে রাজি হননি ইঁটভাটার মালিকরা। তৈরি হয় আক্রোশ।
ইতিমধ্যে খাবার না পাওয়ায় কর্মহীন শ্রমিকদের মধ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়। কীভাবে এই গরিব মানুষদের মুখে খাবার তুলে দেওয়া যায় সেই আলোচনা চলছিল বৃহস্পতিবার রাতে ইঁটভাটার মালিকদের মধ্যে। অভিযোগ, সেই সময় বাবু মাস্টার এলাকা পুনরুদ্ধারের জন্য ৭০ থেকে ৮০ জন তৃণমূলের বাইক বাহিনী নিয়ে এলোপাথাড়ি বোমা ফাটাতে থাকে। বাইক বাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মুরারিশাহ পঞ্চায়েতের প্রধান ওয়াহাব এবং পঞ্চায়েত সদস্য আজগার গাজীর বিরুদ্ধেও। লকডাউন উপেক্ষা করে তান্ডব চালায় হাসনাবাদের মুরারীসাহা গ্রাম পঞ্চায়েতের মসজিদ মোড় এলাকায়।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় বাবু মাস্টার জিন্দাবাদ, বাবু মাস্টার জিন্দাবাদ বলে তারা তাণ্ডব চালায়। অভিযোগ, বাইক বাহিনীরা জেলার শিক্ষার কর্মাধ্যক্ষ এবং হাসনাবাদ ব্লকের ব্লক নেতৃত্ব ফিরোজ কামাল ওরফে বাবু মাস্টারের একান্ত অনুগামী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় হাসনাবাদ থানার পুলিশ বাহিনী। অভিযোগ গোটা ঘটনা মুরারিশাহ চৌমাথায় দাঁড়িয়ে পরিচালনা করছিলেন বাবু মাস্টার।
এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত তৃণমূলের বাইকবাহিনীর বিরুদ্ধে লকডাউন লঙ্ঘন করার জন্য ১৮৮ ধারায় হাসনাবাদ থানায় মামলা রুজু হয়েছে বলে জানা যায়।