জাতীয় পতাকায় মুড়ে বাড়ি ফিরলো কাশ্মীরে নিহত জওয়ানের দেহ

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ১৫ জানুয়ারি: কাশ্মীরে রহস‍্যজনকভাবে মৃত সিআরপিএফ জওয়ানের জাতীয় পতাকায় মোড়া দেহ সেনার গাড়িতে ফিরলো বীরভূমের কীর্ণাহারে। বছর ছত্রিশের সিআরপিএফ জওয়ান বিশ্বজিৎ অধিকারীর বাড়ি কীর্ণাহারের আলীগ্রামে। ২০০৬ সালে তিনি কাশ্মীরে ১১০ নাম্বার ব্যাটেলিয়ানে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে শ্রীনগরে পুলওয়ামায় কর্মরত ছিলেন। আর সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

উল্লেখ্য, শনিবার সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট ব্যাটেলিয়নের পক্ষ থেকে সিআরপিএফ জওয়ানের স্ত্রীকে ফোন মারফৎ খবর দেওয়া হয় বলে জানাগেছে, আর তার ভিত্তিতেই পরিবার-পরিজনরা জানিয়েছেন, মাথায় গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছে বিশ্বজিৎ অধিকারীর। যদিও কিভাবে ঘটেছে এই ঘটনা তা এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। সোমবার সকাল আটটায় ইউনিটের সুবেদার সুরেশ পাশোয়ান জওয়ানের মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয়। তাঁকে গান স‍্যালুট দেওয়া হয়।

মৃত সেনার স্ত্রী নবনীতা অধিকারী কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। তবুও অতি কষ্টে তিনি বলেন, ইউনিট থেকে আমাকে জানানো হয় আমার স্বামী আর নেই। কিন্তু কী কারণে নেই আমাকে বলা হয়নি। বিশ্বজিতের বাবা গৌরাঙ্গ অধিকারী দূরারোগ‍্য ব‍্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। ছেলের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে মা কৃষ্ণা অধিকারী কথা বলার অবস্থায় নেই।

বিশ্বজিতের জ‍েঠু রঞ্জিত অধিকারী বলেন, শান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই। এই কালীপুজোতে বাড়িতে এসেছিল। ছুটি পেলে বাড়িতে আসবো বলেছিল। আর বাড়ি ফেরা হলো না।

পরিবার সূত্রে জানাগেছে, ভাইয়ের মধ‍্যে বড়ো বিশ্বজিতের বিয়ে হয় বছর বারো আগে। বছর দশেক ধরে স্ত্রী নবনীতা তার বছর দশেকের ছেলে আকাশকে নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় থাকতেন। বিশ্বজিৎ ছুটিতে কাটোয়ায় আসতেন। সেই সময় বাড়িও ঘুরে যেতেন। বিশ্বজিতের ছেলে আকাশ কাটোয়ায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। বিশ্বজিতের এক আত্মীয় কাশ্মীরে সিআরপিএফে কর্মরত। তার মাধ‍্যমে বিশ্বজিতের পরিবার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পায়। কিন্তু ইউনিট থেকে মৃত্যু ছাড়া কোনো খবর দেওয়া হয়নি। কি কারণে বিশ্বজিতের মৃত্যু তা ধোঁয়াশা থেকে গিয়েছে পরিবারের কাছে।

জওয়ানের মরদেহ কাটোয়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই গঙ্গার ঘাটে শেষকৃত‍্য সম্পন্ন হয়। নানুরের বিডিও সন্দীপ সিংহ রায় শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *