আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ৩১ জানুয়ারি: অসহায় অভাবি পরিবারে জমি দখলের বিরোধিতা করে জমির মালিকদের পাশে দাড়ানোয় বিজেপি নেতাকে হুমকি। এই বিজেপি নেতাকে এই অন্দোলন থেকে আগেই সরে দাঁড়াতে বলেছিলেন ওসি। কিন্তু তিনি তা না করে অসহায় পরিবারের পাশে দাড়ানোয় তাঁকে হুমকি দিয়ে, সাম্প্রদায়িক কেস দিয়ে জেলে পুরে দেওয়ার হুমকি দিলেন গোপালনগর থানার ওসি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়। হুমকি দেওয়া হয়েছে বিজেপি নেতা অলোক বাইনকে।
ওসির বিরুদ্ধে বিজেপি নেতা এবং জমির মালিকদের আরও অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে ওসি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওই অসহায় পরিবারদের বাড়ি ভাঙ্গচুর করান। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগণার গোপালনগর থানার হরিষপুর এলাকার। শুধু তাই নয় ওসি কাজলবাবু নিজে বিজেপি নেতাকে হুমকি দিয়ে বলছেন, এটা মুসলিমদের ব্যপার হিন্দু হয়ে বিজেপি নেতা তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন কেন? গোপালনগর থানার ওসি ধর্মীয় বিভাজন করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতারা।
উত্তর ২৪ পরগণার গোপালনগর থানার হরিষপুর এলাকায় জমি নিয়ে এই বিবাদ। মালিক পক্ষ আদম আলি তরফদার জানান, সম্প্রতি এই জমির কিছু অংশ মতুয়াদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য দেওয়া হয়েছে। অথচ এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাংশ জোর করে জমির দখল নিয়ে কবরস্থান তৈরির চেষ্টা করছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা অলোক বাইন সহ জমির মালিকরা বাধা দিতে গেলে থানার ওসি কাজলবাবু সামনে থেকে জমির মালিকদের বাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
জমির মালিক আলেয়া বিবি, সঞ্জারা বিবি, সালেহার বিবি, নজরুল মণ্ডল, আবুল সর্দার ও আদম আলি তরফদার বলেন, পুলিশ আমাদের কোনও কথা শুনছে না। পুলিশ দুষ্কৃতীদের হয়ে কাজ করছে, তাই অলোকবাবু দ্বারস্থ হয়েছি। অলোক বাইন দীর্ঘ দিন ধরে এই অঞ্চলের গরিব, দুস্থ মানুষের পাশে থেকে কাজ করছেন তাই অলোকবাবুর সাহায্য চেয়ে ছিলাম। তাকেও পুলিশ হুমকি দিচ্ছে।
আলেয়া বিবি সহ অন্যরা বলেন, ১২ বছর আগে আলেয়া বিবি, সঞ্জারা বিবি, সালেহার বিবি, নজরুল মণ্ডল, আবুল সর্দার ও আদম আলি তরফদার ওই জমি কেনেন। সেখানে ওই ছয় মালিক বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছিলেন। বছর তিন ধরে এক জমির মালিকের কিছু অংশ দখল করে কবরস্থান বা প্রমোটিং করার চেষ্টা করে। এই নিয়ে থানাপুলিশের পর কোর্ট পর্যন্ত পৌছয়। আদালত স্থগিতাদেশ দেয়। সম্প্রতি আদালতকে অবমাননা করে গোপালনগর থানার মদতে ওই জমিতে কবরস্থানের বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাদের অভিযোগ, গতকাল রাতে তাদের বাড়ি চড়াও হয়ে ভাঙ্গচুর করে এলাকার দুষ্কৃতিরা। সেই সময় থানার ওসি সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে তাদের দাবি। রাতের হামলার পর ওই পাঁচটি পরিবার ঘরবাড়ি ফেলে এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
বিজেপি নেতা অলোকবাবু বলেন, মানবিক কারনে অসহায় কয়েকটা পরিবারে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তাঁদের পাশে থাকার কারনে গোপালনগর থানার ওসি এবং আরও এক পুলিশ আধিকারিক লাগাতার হুমকি দিচ্ছে। আজও ওসি গোপালনগর ফোনে হুমকি দিয়ে বলছেন, “এটা মুসলিমদের ব্যাপার আপনি কেন তাঁদের পাশে দাড়াচ্ছেন?” আপনাকে এই অন্দোলন থেকে সরে যেতে বলার পরও সরে দাঁড়াননি। এরপর আপনার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক কেস দিয়ে জেলে ঢুকাবো।” বিজেপি নেতা অলোকবাবু বলেন, ওসি কি ঠিক করে দেবন আমি কার পাশে দাড়াব কি দাড়াব না? এরাজ্যের পুলিশ কি দায়িত্ব নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো কিভাবে আন্দোলন করবে?