আমাদের ভারত, হাওড়া, ১৩ নভেম্বর: বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের মন চেষ্টায় ময়দানে নামল বিজেপি। শুক্রবার বিকেলে আমতা সেহাগড়ী মাঠে বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সংখ্যালঘু মোর্চার ডাকে যোগদান মেলা শীর্ষক এক জনসভায় সংখ্যালঘুদের মন জয়ের জন্য একাধিক প্রতিশ্রুতি শোনা গেল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের গলায়। এদিনের এই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি আলী হোসেন, বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি শিবশঙ্কর বেজ, সাধারণ সম্পাদক প্রত্যুষ মন্ডল সহ অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্ব।
এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, আগে সংখ্যালঘুদের তোষণ করা হতো আর এখন শোষণ করা হচ্ছে। সংখ্যালঘু সমাজে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার এই নিয়েও প্রশ্ন করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, এই রাজ্যে সংখ্যালঘুরা গরিব। রাজ্যের শাসক দল কোনো উন্নতি করেনি সংখ্যালঘুদের জন্য, সংখ্যালঘুদের তারা শুধুমাত্র ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে সবাইকে সমান অধিকার দেবে বলে দাবি করেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্যের সংখ্যালঘুদের দুরবস্থার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে এদিন তিনি বলেন, গুজরাটে যেখানে সাড়ে ৭ শতাংশ সংখ্যালঘু সরকারি চাকরি করেন সেখানে এই রাজ্যে মাত্র এক শতাংশ সংখ্যালঘু মানুষ সরকারি চাকরি করেন। এদিন দিলীপ ঘোষ ইমাম ভাতার পাশাপাশি পুরোহিত ভাতার বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন মুসলমান সমাজ যেমন ইমামদের খাওয়াতে পারবেন সেই রকম হিন্দু সমাজও পুরোহিতদের খাওয়াতে পারবেন। এদিন তিনি পুরোহিতদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা পাপের টাকা নেবেন না।
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে নির্ভয়ে ভোট দেওয়া প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন এবারে সমস্ত বুথ পাহারা দেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, রাজ্য পুলিশ রাস্তায় বসে চা খৈনি খাবে। সুতরাং যদি কেউ বুথ দখল করতে আসে তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী মেরে তার কোমর ভেঙ্গে দেবে বলে জানান দিলীপ ঘোষ।
এদিনের এই জনসভায় উলুবেড়িয়া, আমতা, বাগনান সহ হাওড়া গ্রামীণ জেলার বিভিন্ন বিধানসভা এলাকা থেকে কয়েক হাজার সংখ্যালঘু মানুষ বিজেপিতে যোগদান করেন। দলে যোগ দেওয়া কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এদিকে এদিনের এই জনসভায় সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে বিজেপি কর্মীদের যোগদান করা নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। করোনা সংক্রমণের মাঝে কিভাবে একসাথে এত কর্মী-সমর্থক নিয়ে বিজেপি নেতারা জনসভা করলেন সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে অনেকে। যদিও বিজেপি নেতাদের দাবি, তৃণমূলের জনসভা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে বিজেপি এই ধরনের জনসভার আয়োজন করেছে।