রাজেন রায়, কলকাতা, ১৯ জানুয়ারি:‘গো-মাংস রান্না’ বিষয়ে মুখ খুলে বর্তমানে গেরুয়া শিবিরের চক্ষুশূল হয়েছিলেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। ক্রমাগত ধর্ষণ, খুনের হুমকি আসতে থাকায় শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সেসব পোস্টের স্ক্রিনশট নিয়ে সোমবারই যাদবপুর থানায় এবং মহিলা কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন দেবলীনা দত্ত ও তাঁর স্বামী তথাগত মুখোপাধ্যায়। তারই পালটা দিতে দেবলীনার বিরুদ্ধে বাগুইআটি থানায় এফআইআর দায়ের করলেন জনৈক বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে গো-মাংস খাওয়ার কথা বলে হিন্দুধর্মের ভাবাবেগে আঘাত হেনেছেন অভিনেত্রী।
সোমবার রাতেই নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে আইনি পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তরুণজ্যোতি। ওই পোস্টে তিনি জানান, দেবলীনা দত্ত বা সায়নী ঘোষের মতো ‘স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবী’ কে বা কারা? তিনি জানেন না। সংশ্লিষ্ট বিজেপি নেতার মন্তব্য, “গতকাল বলেছিলাম, আজকে আবার বলছি। আইনি পথে ব্যবস্থা হবে। দেখা যাক কত বড় বুদ্ধিজীবী আপনারা। আপনারা সস্তা হতে পারেন, আমার ধর্ম সস্তা নয়। তরুণজ্যোতি বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তা হিসেবে না, বরং একজন হিন্দুত্ববাদী আইনজীবী হিসেবে বললাম। আমি কোনও কিছু ভুলি না। ফেসবুকে গল্প লিখে সমবেদনা পাবেন না। এবার আইনের ছন্দে নাচার জন্য প্রস্তুত থাকুন।”
বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি পুলিশকে কটাক্ষ করে এও বলেন যে,”দেখা যাক, পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ পদক্ষেপ নেয় কিনা। আইনের ছাত্র হিসেবে আইনি পথে প্রতিবাদ করতে ভালোবাসি। সেটা চালিয়ে যাব। সবাইকে অনুরোধ করব শালীনতার মাত্রা রেখে আইনি পথে পদক্ষেপ নেওয়ার। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ পদক্ষেপ না নিলে বুঝতে হবে তারাও দুর্গাপুজোর সময় গো-মাংস খাওয়া সমর্থন করে। সকল হিন্দুত্ববাদী বন্ধুকে তাদের স্থানীয় থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে অনুরোধ করব। বুদ্ধিজীবী হওয়া মানে হিন্দুধর্মকে আক্রমন করার লাইসেন্স পাওয়া না। এটা বোঝানোর সময় এসেছে ওদের।”
সম্প্রতি এক টক শোয়ে দেবলীনা দত্ত বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করার সময় গায়ক তথা পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের কথার সূত্র ধরে জানান, নিরামিষভোজী হলেও প্রয়োজনে তাঁর বাড়িতে গিয়ে নবমীর দিন দেবলীনা গরুর মাংস রান্না করে দিতে পারেন। কারণ খাদ্যাভাস এবং ধর্ম বিষয়ে তিনি এতটাই ছূৎমার্গহীন। তারপর সোশ্যাল মিডিয়াতে খুন ধর্ষণের হুমকি আসতে থাকে দেবলীনার বিরুদ্ধে। এবার তার পাল্টা অভিযোগ করলেন বিজেপি নেতা।