আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৩১ মে: পুলিশের উপর হামলার ঘটনার পর থেকে পুরুষ শূন্য বীরভূমের মল্লারপুর থানার পাথাই গ্রাম। শুক্রবার সেই গ্রাম সরেজমিনে পরিদর্শন করলেন রাজ্য বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের নেতৃত্বে দশ জনের একটি প্রতিনিধি দল পাথাই গ্রামে পৌঁছান। গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঘটনার দিনের খোঁজখবর নেন তাঁরা। বিজেপির প্রতিনিধি দলের প্রধান শ্যামাপদ মণ্ডলের দাবি, পুলিশের অপরিকল্পিত ভূমিকা ও ব্যর্থতার কারণেই ঘটনার দিন গ্রামবাসীরা পুলিশের হাতে আক্রান্ত হন। পাল্টা আক্রান্ত হতে হয়েছে পুলিশকেও। তাঁর অভিযোগ, ঘটনার ১৫ দিন পরেও গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত। গ্রামছাড়া হয়ে রয়েছেন পুরুষরা। বহু নিরাপরাধ মানুষকে মিথ্যে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৬ মে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে অশান্তির মীমাংসা করতে মল্লারপুর থানার পাথাই গ্রামে যায় পুলিশ। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন গ্রামবাসীদের একাংশের। সংঘর্ষে তিন পুলিশ আধিকারিক সহ আটজন পুলিশ কর্মী জখম হন। পুলিশের পাশাপাশি জখম হন আটজন গ্রামবাসীও। তার পরেই গ্রামে ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা জেল হেফাজতে রয়েছে। এদিন রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধি দল পাথাই গ্রামে পৌঁছলে পুলিশি অত্যাচারের কথা তাদের কাছে জানান গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নির্দোষদের বাড়িতে ভাঙ্গচুর চালিয়ে মারধর করেছে পুলিশ। পুলিশের আতঙ্কে ঘটনার ১৫ দিন পরও গ্রামছাড়া হয়ে রয়েছেন পুরুষরা। গ্রাম পুরুষহীন থাকায় কার্যত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন পাথাই গ্রামের মহিলারা।
শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা বাড়িতে রয়েছেন। অথচ বেছে বেছে বিজেপি সমর্থকদের গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নির্দেশ মতো পুলিশ গ্রামে অত্যাচার চালাচ্ছে। এই দ্বিচারিতা আমরা মানব না। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের দ্বারস্থ হয়ে এর বিধান চাইব”।
তৃণমূল নেতা প্রদীপ কুমার দাস বলেন, “দুটি পরিবারের মধ্যে বিবাদ মেটাতে এসে পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে। এখানে কোনো দল দেখা হয়নি। গ্রামবাসীরা পুলিশের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে সব দলের সদস্য রয়েছে। যারা অভিযুক্ত তারাই শুধু গ্রামছাড়া রয়েছে।”