Ram Temple, Ayodhya, ত্রেতা যুগের অযোধ্যা কলিযুগের অযোধ্যার আকাশে এসে দাঁড়িয়েছে

সুকন্যা রায়, আমাদের ভারত, ২৬ নভেম্বর: অযোধ্যার আকাশে আজ যেন নতুন করে দীপ জ্বলে উঠেছে। কারণ শ্রী রামমন্দিরের চূড়ায় আবারও উড়তে শুরু করেছে সেই প্রাচীন ধর্ম–ধ্বজা, যেটি একসময় ত্রেতা যুগের আয়ুধ ও অহংকারের প্রতীক ছিল।

*“स एष हि महा कायः कोविदारध्वजो रथे”*— অযোধ্যাকাণ্ডের সেই শ্লোক যেন আজ জীবন্ত হয়ে উঠেছে, কারণ ভরতের রথের শোভা বাড়ানো যে কোভিদার–ধ্বজ, সেই একই ঐতিহ্য আজ ফিরে এসেছে শ্রী রামমন্দিরের শিখরে। এই ধ্বজার বুকে খোদাই করা হয়েছে এক পবিত্র বৃক্ষের প্রতিকৃতি— কোভিদার; কথিত আছে, ঋষি কাশ্যপ পারিজাত ও মন্দারের দিব্য সংকর রূপে এই কোভিদার বৃক্ষকে সৃষ্টি করেছিলেন, তাই এটি এক সঙ্গে ধর্ম, পবিত্রতা, প্রাচীন জ্ঞান আর সমৃদ্ধির দীপশিখা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ধর্মধ্বজায় জ্বলজ্বল করছে তিনটি দিব্য প্রতীক— সূর্য, ওঁ এবং কোভিদার বৃক্ষ; সূর্য স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে শ্রীরামের অমর সূর্যবংশকে, ওঁ চিহ্ন ব্রহ্মের সর্বব্যাপী সত্তাকে ধারণ করছে, আর কোভিদার জানিয়ে দিচ্ছে যে অযোধ্যার প্রাচীন রাজধ্বজা আজ আবার নিজ গৃহে ফিরে এসেছে।

মনে হয় যেন ত্রেতা যুগের অযোধ্যা কালসীমা ভেদ করে কলিযুগের অযোধ্যার আকাশে এসে দাঁড়িয়েছে, আর এই একটুকরো পতাকায় গাঁথা হয়েছে রাজধর্ম, রাজশক্তি, ভক্তি আর অনন্ত করুণা।

ভক্তের চোখে আজকের এই ধ্বজারোহন কেবল একটা আচার নয়, বরং বহু শতাব্দীর অপেক্ষা, অগণিত ত্যাগ ও অশ্রুর পর প্রাপ্ত এক আধ্যাত্মিক আশ্বাস— যে রামরাজ্যের স্বপ্ন কখনও মুছে যায় না, শুধু সময়ের অপেক্ষায় আবার জেগে ওঠে।

অযোধ্যার মন্দির–প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে যখন এই ধ্বজা বাতাসে দোলে, তখন মনে হয়— ভরত আবার যেন প্রভু শ্রীরামের দরজায় এসেছে মাথা নত করে, আর কোভিদার–ধ্বজা আজও নীরবে ঘোষণা করছে, “ধর্ম কখনও পরাজিত হয় না, শুধু ফিরে আসার শুভ মুহূর্ত খোঁজে।”
লেখক পরিচিতি :
সুকন্যা রায়, শিক্ষিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *