আমাদের ভারত, ২৬ ফেব্রুয়ারি:
মাসখানেক আগে জ্ঞানব্যাপী মসজিদের বেসমেন্টে পুজো পাঠ শুরু করেছিল হিন্দুরা। আদালতে নির্দেশেই তা হয়েছিল। কিন্তু সেই পুজোপাঠের ওপর স্থগিতদেশ চেয়ে মুসলিম পক্ষ উচ্চ আদালতের দারস্থ হয়েছিল। কিন্তু মুসলিম পক্ষের সেই আবেদনও খারিজ হয়ে গেল এলাহাবাদ হাইকোর্টে।
অযোধ্যার মতোই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিবাদ বিতর্ক তৈরি হয়েছে বারানসির জ্ঞানব্যাপী মসজিদ নিয়ে। আদালতের নির্দেশে সেই মসজিদের বেসমেন্টে পুজো শুরু করেছেন হিন্দুরা। কিন্তু এর বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মুসলিম পক্ষ। সেই মামলা খারিজ করে দিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, জ্ঞান ব্যাপীর বেসমেন্টে পুজো চালিয়ে যেতে পারবেন হিন্দুরা।
অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটির তরফেএলাহাবাদ হাইকোর্টে পুজোর বিরোধিতা মামলার আবেদন করা হয়েছিল। যুক্তি ছিল, ১৯৩৭ সালেজ্ঞানব্যাপী সংক্রান্ত বিবাদের রায় মুসলিমদের পক্ষে গিয়েছিল। এই আবহে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে নতুন করে এখানে সমীক্ষায় চালাতে পারে না, এমনকী বারানসি আদালতের নির্দেশে করা অ্যাডভোকেট কমিশনারের রিপোর্টকে উপেক্ষা করেই পুজোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। কিন্তু হাইকোর্টে কোনও যুক্তি গৃহীত হয়নি।
হিন্দু পক্ষে দাবি মেনে জ্ঞানব্যাপী মসজিদের নির্দিষ্ট অংশে পুজোপাঠের অনুমতি দিয়েছিল বারানসি জেলা আলাদা। পরে এলাহাবাদ হাইকোর্টে এই নিয়ে মামলা হয়। তবে পুজো বন্ধ করার কথা বলেনি উচ্চ আদালত। গত ১ ফেব্রুয়ারি জ্ঞানব্যাপীর বেসমেন্টে ব্যাস কা তহখানায় পুজোর পাঠ শুরু করা হয়েছিল ।
২০২১ সালের আগস্টে ৫ হিন্দু মহিলা জ্ঞানব্যাপীর দেওয়ালে দেব দেবীর মূর্তির অস্তিত্ব দাবি করে তার পুজোর অনুমতি চেয়ে মামলা দায়ের করেছিল। তার প্রেক্ষিতেই ২০২২ সালে অ্যাডভোকেট কমিশনারের তত্ত্বাবধানে মসজিদের ভেতরে ভিডিও সমীক্ষা করার নির্দেশ দেয় বারানসী নিম্ন আদালত। সেই রিপোর্ট জমা পড়েছিল। সেই সংক্রান্ত নির্দেশ ঘোষণার আগে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বারানসি জেলা আদালতে জ্ঞানব্যাপী মামলা স্থানান্তরিত হয়। জেলা আদালতের নির্দেশে এএসআই ভার পায় বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার। তার ভিত্তিতে ব্যাস কা তহেখানায় পূজার অনুমতি দেয় জেলা আদালত। হিন্দুপক্ষ দাবি করেছে, এই ব্যাস কা তেহেখানা একসময় ব্যাস পুরোহিত বংশের দখলে ছিল। তারা একসময় ওখানে বসবাস করত। শৈলেন্দ্র কুমার পাঠক ব্যাস নামে ওই বংশের পুরোহিত আদালতে জানান, ১৯৯৩ সালের গোড়া পর্যন্ত তারা ওখানে পূজা করেছেন। কিন্তু ১৯৯২ এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুযলায়েম সিং যাদব পুজো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই সময় ওই মন্দিরে পুরোহিত ছিলেন সোমনাথ ব্যাস। শৈলেন্দ্র সোমনাথের উত্তরাধিকারী হিসেবেই আবার পূজো করার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।