প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভুয়োদের প্রতিবন্ধী শংসা পত্র দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার

সাথী প্রামানিক, আমাদের ভারত, পুরুলিয়া ৩ ডিসেম্বর: প্রকৃত দাবিদারদের বঞ্চিত রেখে স্বাস্থ্য কর্মীদের সাহায্য নিয়ে ভুয়ো প্রতিবন্ধীদের শংসা পত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে সরব হলেন খোদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি পর্যন্ত সবাই।

মঙ্গলবার, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানে জেলাশাসক রাহুল মজুমদার ও সমাজ কল্যাণ আধিকারিক কালিদাস ভট্টাচার্যর উপস্থিতিতে নিজেদের বক্তব্যে এই সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তাঁরা। জেলা পরিষদের সভা কক্ষে মাঝিহিড়া ন্যাশন্যাল বেসিক এজুকেশন ইন্সটিটিউট আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানটি কার্যত সরকারি অনুষ্ঠানে পরিণত হয়ে যায়। আয়োজক সংস্থার কার্যকরী সম্পাদক প্রসাদ দাশগুপ্ত জেলার তিনটি ব্লকের প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজের তাঁদের প্রতিষ্ঠানের সাফল্য উপস্থাপন করেন। সেখানেই তিনি আক্ষেপের সঙ্গে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়ের অভাবের ফলে প্রতিবন্ধীদের শংসাপত্র পেতে সমস্যার কথা বলেন। ওই কথারই রেশ ধরে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি তাঁর বক্তব্যে স্বাস্থ্য দফতরের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চোখের সামনে দেখছি প্রকৃত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের শংসা পত্র পেতে হয়রানি হতে হচ্ছে। এই বিষয়ে জেলাশাসককে বলব শংসাপত্র অনুমোদনকারি বিশেষ বোর্ডের উপর নজরদারি তিনি যেন রাখেন। জেলায় একটি কিছু ঘটছে। এক শ্রেণির মানুষ অসদুপায়ে শংসাপত্র নিয়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন।’


    
জেলাশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘সমাজের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা আগে আমাদের দূর করতে হবে। প্রতিবন্ধীরা কোনও অভিশাপ নয়। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে আবেদনের তিন মাসের মধ্যে শংসাপত্র পেয়ে যাবেন। যদি না পান তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।’

   
ন্যাশন্যাল ট্রাস্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী জেলা কর্মরত কোনও সংস্থার রেজিস্ট্রেশন না থাকার ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য প্রতিবন্ধীদের বিমা থেকে বঞ্চিত থাকছে পুরুলিয়া। এর ফলে নূন্যতম প্রিমিয়াম দিয়ে বিমা ‘নিরাময় প্রকল্প’ অধরা থেকে যাচ্ছে জেলার প্রতিবন্ধীদের কাছে। এর সুবিধা পাচ্ছেন না জেলার কুড়ি হাজারেরও বেশি প্রতিবন্ধী। এই তথ্য দিয়ে জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের যে নির্দেশিকা বা আইন রয়েছে তাতে বলা হয়েছে অসরকারি সংস্থা ছাড়া এর সুবিধা পাওয়া যাবে না। কাজেই আমি বলব মাঝিহিড়া ন্যাশন্যাল বেসিক এজুকেশন ইন্সটিটিউট যদি এই রেজিস্ট্রেশনটা করে নয় তাহলে জেলায় তাদের মাধ্যমে এই প্রকল্প রূপায়িত সম্ভব হবে।’ জেলায় আইটিআই মধ্যে মাত্র ১০২০০ জন প্রতিবন্ধী মানুষ সরকারি ভাতা পান। বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে।

   
এদিন অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে ১২০ জন প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রী এবং মানুষের হাতে নতুন বস্ত্র এবং কম্বল তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া চার জন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে সফল ছাত্র ছাত্রীর হাতে পড়ার সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়।   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *