আমাদের ভারত, ১ মে :
কেন্দ্রকে রিপোর্ট দিতে গিয়েই পশ্চিমবঙ্গের করোনা আক্রান্তের আসল সংখ্যা বেরিয়ে এলো। রাজ্যে ১০টা নয় ৪টি রেড জোন রয়েছে এই মুহুর্তে। কেন্দ্রকে প্রমাণ সহ বোঝাতে গিয়েই জানা গেল রাজ্যে করোনা আক্রান্তের আসল সংখ্যা কমপক্ষে ৯৩১।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব প্রীতি সুদানকে রাজ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বিবেক কুমার যে চিঠি দিয়েছে তা থেকে পরিষ্কার এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৩১ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এই রাজ্যে। অথচ বৃহস্পতিবার বিকেলেও নবান্নে মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা জানিয়েছিলেন এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭২। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিনে বলা হয়েছিল বাংলায় এখনো পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯৫ জন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা তার থেকে অনেকটাই বেশি। আর এর ফলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে দ্বন্দ্ব আরও বাড়ল। বিভ্রান্তিও বাড়লো মানুষের মনে।
তবে বিবেক কুমারের চিঠিতে থেকে পরিষ্কার যে কলকাতার অবস্থা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। রাজ্যের সচিবের দেওয়া ওই চিঠিতে কলকাতায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮৯।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদন সব রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে গোটা দেশের তালিকা পাঠিয়েছেন। তাতে পশ্চিমবঙ্গের দশটি জেলাকে রেড জন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, দুই২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, মালদা। এই দশটি জোলাকে রেড জোনের আওতায় ফেলেছে কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের পাল্টা দাবি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং-এর মত জেলাকে রেড জোন বলা যায় না। কারণ দার্জিলিংয়ের শেষ কোভিড পজিটিভ পাওয়া গেছে ২১ এপ্রিল। জলপাইগুড়িতে ৪ এপ্রিল এবং কালিম্পং- এ ২ এপ্রিল। তারপর থেকে কোনও কোভিড আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি সেখানে।
৩০ এপ্রিল কেন্দ্র সচিব প্রীতি সুদানকে দেওয়া চিঠিতে বিবেক কুমার জানিয়েছেন রেড জোনে থাকা কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮৯। অন্যদিকে রেড জোনের অন্যান্য জেলার মধ্যে হাওড়ায় আক্রান্ত সংখ্যা ১৭৬, উত্তর ২৪ পরগনা ১২২, পূর্ব মেদিনীপুরের ৩৪ জন আক্রান্ত। এদিকে রাজ্যের হিসেব মত রেড জোন ছাড়া অরেঞ্জ জোনে থাকা ১১ টি জেলা থেকে আক্রান্ত হয়েছেন ১১০ জন। গ্রীন জনের তালিকাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। তবে রেড অরেঞ্জ মিলিয়ে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৯৩১ জন।
প্রথম থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোভিড পজিটিভের সংখ্যায় তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলে আসছে বিরোধীরা। গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে দেওয়া চিঠির মাধ্যমে ফের একবার বিরোধীদের অভিযোগ গুলি স্পষ্ট ভাবে চোখে পড়ছে বলে দাবি করেছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।