পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট ২৬ আগস্ট: সিভিক ভলান্টিয়ারও এবার তুলছে কাটমানি! ঠিকাদারের সাথে দাদাগিরি দেখিয়ে কাটমানি তোলার অভিযোগ সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ জানাতেই বেধড়ক মারধর ঠিকাদারকে। লোহার রড ও লাঠি দিয়ে ফাটিয়ে দেওয়া হয় মাথাও। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর থানার গোকর্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের মুস্কিপুর পুলিশ ক্যাম্পের সামনে এমন ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। খোদ পুলিশ ক্যাম্পের সামনে সিভিকের দাদাগিরির এমন ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে জেলায়। ঘটনার পরেই রক্তাক্ত অবস্থায় ঠিকাদার সজিবর রহমানকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একইসাথে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার আব্দুল বারেক কে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন বাসিন্দারা। পুরো ঘটনার জেরে আক্রান্ত পরিবারের তরফে মোট আট জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত নিজেকে অনুব্রত মণ্ডলের চ্যালা বলেও দাবি করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রের খবর, পেশায় ঠিকাদার সজীবর রহমান হরিরামপুরের গোকর্ণ গ্রামপঞ্চায়েতেরই বাসিন্দা। মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় পঞ্চায়েতে বিল তুলতে গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় গোকর্ণ পঞ্চায়েতের মুস্কিপুর সংসদের মেম্বারের জামাই তথা সোনাপালের ঘনিষ্ঠ ওই সিভিক কর্মী আব্দুল বারেক ও তার দলবল নিয়ে ঠিকাদারের কাছে কাটমানি দাবি করে। যা দিতে অস্বীকার করা মাত্রই পঞ্চায়েতের ভেতরে তার ওপর চড়াও হয় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার বলে অভিযোগ। যদিও সেই সময় বিষয়টি মিটিয়ে দেন পঞ্চায়েতের লোকজনরা।

ছবি: পুলিশ কর্মীর পিছনে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার
অভিযোগ, তারপর বাড়ি ফেরার পথে মুস্কিপুর পুলিশ ক্যাম্পের সামনে সিভিক কর্মী আব্দুল বারেক তার দলবল নিয়ে ঠিকাদারের উপর অতর্কিত আক্রমণ করেন। লাঠি ও লোহার রডের আঘাতে মাথা ফাটিয়ে দেয় ওই ঠিকাদারের বলে অভিযোগ। ঘটনার পর আহত সজীবরকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। সেই সময় আশ্চর্যজনকভাবে নিজেকে অনুব্রত মন্ডল বলে দাবি করে চিৎকার করতে থাকেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। আর তাতেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। মুস্কিপুর পুলিশ ক্যাম্পে আটক করে রাখা হয় অভিযুক্ত সিভিক কর্মীকে। পরে হরিরামপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় মোট আট জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সজীবরের পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা।
আহত ঠিকাদার সজীবর রহমান বলেন, পঞ্চায়েত থেকে বিল তুলে বেরোতেই ওই সিভিক ভলান্টিয়ার কাটমানি দাবি করে। দিতে না চাইতেই মারতে পঞ্চায়েতে ঢুকে পড়ে। সেখানে মারতে না পারলেও পরে বাড়ি ফেরার সময় তাকে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে ওই সিভিক ও তার দলবল।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এমন ঘটনায় তারা যথেষ্টই অবাক। কাটমানি না দেওয়ায় সিভিক ভলান্টিয়ার লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করছে সাধারণ মানুষকে।
হরিরামপুর থানার আইসি সঞ্জীব বিশ্বাস জানিয়েছেন, সিভিক ভলান্টিয়ার আব্দুল বারেক কে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্তে নামা হয়েছে।

