ঝাড়গ্রামে শুরু হলো নবম জঙ্গলমহল উৎসব, গান গেয়ে আনন্দে মাতলেন মন্ত্রী থেকে আমলা

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১৮ জানুয়ারি: আজ ঝাড়গ্রামে শুরু হল নবম জঙ্গলমহল উৎসব। বুধবার ঝাড়গ্রাম শহরের ঝাড়গ্রাম ননীবালা বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ৯তম জঙ্গলমহল উৎসব। এদিন প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ একাধিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। তিন দিন ধরে চলবে এই জঙ্গলমহল উৎসব।

এদিন অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই আনন্দে মাতলেন মন্ত্রী থেকে আমলা, পুলিশ থেকে জনপ্রতিনিধি সকলে। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, পাঞ্জাবি, সাঁওতালী ও টুসু গানের সুরে ভরে গেল মঞ্চ। হিন্দি গানে গলা মেলালেন ঝাড়গ্রামের জেলা শাসক সুনীল কুমার আগরওয়ালা। সাঁওতালি গান গাইলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। টুসু গান গাইলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস। এদিন পাঞ্জাবী গান গাইতে দেখা গেলো অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অগ্নিত পুনীয়াকে। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গলায় গান শোনার জন্য দর্শক আসনে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

জঙ্গলমহল উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রথমেই শুরু হয় এই সঙ্গীত অনুষ্ঠান। প্রথম গান করেন বিনপুর থানার ওসি স্বরূপ বসাক। মান্না দে’র গানে সুর মেলান তিনি। তারপর একে একে গান করেন ঝাড়গ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান কবিতা ঘোষ ও ভাইস চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য কাউন্সিলররা। কবিতা ঘোষের সঙ্গে গলা মেলান সকলে। এরপর ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলাশাসক অগ্নিত পুনিয়া একটি পাঞ্জাবী গান করেন। জেলা গ্রাম উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত আধিকারিক অনন্য জানা ‘কালো জলে কুচলা তলে ডুবল সনাতন’ গানটি পরিবেশন করেন। লোক কবির কবিতা পাঠ করেন ঝাড়গ্রামের মহকুমা শাসক বাবুলাল মাহাতো। এডিএম ধরিমান বরুই, বিনপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাহালা হাঁসদা ও ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মু সাঁওতালি গান পরিবেশ করেন। সাঁওতালি বিয়ে বাড়ির একটি বিশেষ গান করেন মামনি। জেলা আনন্দধারা প্রকল্পের অধিকারী শর্মিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায় একটি ইংরেজি ভাষায় গান পরিবেশ করেন। এসটি, এসসি দপ্তরের জেলা আধিকারিক শঙ্খ শুভ্র দে বাংলা সিনেমার খুব পরিচিত” আজ এই দিনটিকে মনের খাতায় লিখে রাখো” গানটি করেন। গান শুরু হতেই দর্শক আসনে বসে থাকা প্রত্যেকের উল্লাস ছিল দেখার মতো। উৎসাহ নিয়ে গানের সাথে গলা মেলান সকলে। গানের শেষে আসে অনুরোধও। এরপর যথারীতি সকলের অনুরোধে আরও একটি গান করেন তিনি। গান করেন পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ ও শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান রবিন টুডু ও ট্রাইবাল অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের সদস্য বীরবাহার সরেন টুডু সাঁওতালি গান করেন। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস একটি টুসু গান পরিবেশন করেন। সভাধিপতির পরেই একটি হিন্দি গান পরিবেশন করেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল কুমার আগরওয়াল। মঞ্চে সর্বশেষে একটি সাঁওতালি গান পরিবেশন করেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।

প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে এদিনের অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল কুমার আগরওয়ালা বলেন, ”সরকারি আধিকারিক থেকে শুরু করে মন্ত্রী জনপ্রতিনিধিরা সব সময় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিভা কখনো প্রকাশ পায় না। সারাদিনের কাজের চাপ ফেলে দিয়ে মানুষের কাছে যদি এই প্রতিভা গুলো তুলে ধরা যায় তাহলে একটা আনন্দ পাওয়ায় যায়। যে সমস্ত সাধারণ মানুষ জন অনুষ্ঠান দেখতে এসেছে তারাও দেখবে যে প্রশাসনের এক অন্য মুখ। ফলে সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনের মধ্যে এক নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হবে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *