জয় লাহা, দুর্গাপুর, ২৯ অক্টোবর: ‘খেলা হবের নামে ভোট নিয়ে প্রহসন করেছে। দুর্নীতি ধরা পড়েছে। টেট এসএসসি দুর্নীতির মুখোশ খুলে গেছে। কোটি কোটি টাকা ধরা পড়েছে। এটাই খেলা হবের উত্তর। যেভাবে খেলবে, আরও বেশি উত্তর পাবে। পরীক্ষায় পাশ করেও চাকরি পায়নি। বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে বেকার যুবক যুবতীরা বসে। কেউ আত্মহত্যা করেছে, কেউ অন্য রাজ্যে কাজের তাগিদে গেছে। ঘরে ঘরে এই সমস্যাগুলো একসাথে নিয়ে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইস্যু হবে।’ শনিবার দুর্গাপুরে বিধায়ক কাপের উদ্বোধনে এসে রাজ্যে শাসক দলকে আক্রমন করলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি।
উল্লেখ্য, রাজ্যে কড়া নাড়ছে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে নতুন করে কোমর বাঁধছে রাজ্যের গেরুয়া শিবির। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছিল গেরুয়া বিগ্রেড। ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার পর ঘরছাড়া ছিল দলের নীচুতলার বহু কর্মীরা।
বর্তমানে রাজ্যেজুড়ে কয়লা, গরু পাচার ও টেট কেলেঙ্কারি ধরা পড়েছে। শাসক দলের অনুব্রত মন্ডল, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো তাবড় নেতা মন্ত্রীরা শ্রী ঘরে যেতেই গেরুয়া শিবিরে কিছুটা হলেও অক্সিজেন জুগিয়েছে। ইতিমধ্যে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে ও সংগঠনকে মজবুত করতে জেলায় জেলায় নিয়মিত কর্মসূচিতে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। শনিবার দুর্গাপুরে বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুইয়ের উদ্যোগে ছিল বিধায়ক কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা। এদিন ওই খেলার উদ্বোধন করেন বিজেপি সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি। শান্তির বার্তা দিতে পায়রা উড়িয়ে খেলার উদ্বোধন করেন ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে মাঠে আলাপচারিতা করেন তিনি। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
এদিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর কলমধারী মাওবাদীর মন্তব্যকে সমর্তন জানিয়ে বলেন, নিশ্চই। এরাজ্যের বুদ্ধিজীবীরা কখনই দেশের ভালো চায় না। তারা সৎ চরিত্র, সৎ মানুষের কাছে যায় না। সৎ কর্মে মাথা নত করে না। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন, সহমত। এবং পাশে আছি।” আগাগোড়া রাজ্যের শাসক দলের দুর্নীতি ও অস্ত্র উদ্ধারকে তুলে ধরে কড়া আক্রমন করে লকেট চ্যাটার্জি বলেন, “রাজ্যে যেভাবে অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে, তাতে শাসক দল পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অতীতের ঘটনা সাক্ষী, বোমা, অস্ত্র ভান্ডার, বারুদের স্তুপ করে পঞ্চায়েত নির্বাচন করেছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট মানেই রক্তপাত, খুন, সন্ত্রাস।” তিনি আরও বলেন,”জনগণের ভোটে সরকার গড়লেও, এখন মানুষের ওপর তাদের বিশ্বাস নেই। তাই তাদের একমাত্র ভরসা বোমা, অস্ত্র।”
তিনি আরও বলেন, “খেলা হবের নামে ভোট নিয়ে প্রহসন করেছে। দুর্নীতি ধরা পড়েছে। টেট এসএসসির দুর্নীতির মুখোশ খুলে গেছে। কোটি কোটি টাকা ধরা পড়েছে। এটাই খেলা হবের উত্তর। যেভাবে খেলবে, আরও বেশি উত্তর পাবে। পরীক্ষায় পাশ করেও চাকরি পায়নি। বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে বেকার যুবক যুবতীরা বসে। কেউ আত্মহত্যা করেছে, কেউ অন্য রাজ্যে কাজের তাগিদে গেছে। ঘরে ঘরে এই সমস্যাগুলো একসাথে নিয়ে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের ইস্যু হবে।’ বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল জেলে। বীরভূম সহ রাজ্যে বিজেপির পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফলাফল প্রসঙ্গে তিনি বলেন,” মস্তান, গুন্ডারা যারা বড় বড় কথা বলেছে, তারাও ভয় পেয়েছে। জেলে যাওয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। কান্নাকাটি করেছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কালিঘাটে দরবার হয়েছে। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। জেলে যেতে হয়েছে।”
তিনি বলেন,” বিধায়ক কাপ, খেলাধূলার মাধ্যমে যুবক-যুবতীদের ঐক্যবব্ধ করতে পারব। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবে যুবক-যুবতীরা। আগামী দিনে আলোর পথ দেখাবে।” তিনি আরও বলেন,” দুর্নীতি আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি চোখে চোখ রেখে লড়াই করছে। এই লড়াই গণতন্ত্রকে জেতাবে। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূম সহ গোটা রাজ্যে বিজেপি ভালো ফল করবে।”