বিশ্বরূপ অধিকারী, জঙ্গিপুর, ৪ঠা সেপ্টেম্বর: সব শেষ! দোতলা- তিনতলা বাড়ি গিলে খেল আগ্রাসী গঙ্গা। কান্নার রোল মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের ধানঘরা, হীরানন্দপুর এলাকায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে গেলো এক এক করে প্রায় ৭০টিরও বেশি বাড়ি। ঘটি, বাটি হাতে জীবন নিয়ে কোনোরকমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেন দুর্গত বাসিন্দারা। আতঙ্কে বাড়িঘর ভেঙ্গে অন্যত্র পালাচ্ছেন পাঁচ শতাধিক পরিবার। এলাকায় কার্যত হাহাকার।
গত ১৫দিন ধরে গঙ্গার আগ্রাসী ভাঙনে চোখের সামনে তলিয়ে যাচ্ছে ঘর বাড়ি জমি ও জায়গা। এবার চোখের সামনে ভাঙনে গঙ্গায় তলিয়ে গেলো মোট ৭০টি বাড়ি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতের ভাঙনে তলিয়ে গেছে বাড়ি, জমি, সাইকেল সহ বেশ কয়েকটি গবাদি পশু। পাশাপাশি বহু গাছপালা তলিয়ে গিয়েছে। ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে সামসেরগঞ্জের নতুন শিবপুর গ্রামে।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ভাঙনে নদীগর্ভে বাড়িঘর তলিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত দেখা মেলেনি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের। এলাকাবাসীর দাবি অবিলম্বে গঙ্গা ভাঙ্গনের স্থায়ী সমাধানের পথ বের করুক রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার। অতি দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক সরকার।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত ১৫দিন ধরে মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ ব্লকের ধানঘড়ায় ভাঙনের মুখে পড়ে। ফরাক্কা হোসেনপুরে ভাঙন চলছে গত এক সপ্তাহ ধরে, হোসেনপুর চরের পাশাপাশি এবার ভাঙনের মুখে কুলিদিয়ার গ্রাম। বৃহস্পতিবার রাতেই সামশেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙন তলিয়ে গেল চাষের জমি আম লিচুর বাগান বসতভিটা। ভাঙনের আতঙ্কে নিজেদের বাড়ি ঘর ভেঙে নিচ্ছে এলাকাবাসী। বেশ কয়েক দিন ধরেই ভাঙনের মুখে কুলিদিয়ার ও ধানখড়া গ্রামের বাসিন্দারা।

এলাকার বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা পর থেকে নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে এবং গঙ্গার জল ঢুকে গ্রামের একাংশ প্লাবিত। প্রায় ৭০টি ঘর ভেঙে গেছে, গঙ্গার জল বৃদ্ধি পাওয়া ফলে এই সমস্যা। গঙ্গার জলস্তর না কমলে ভাঙনের গ্রাসে চলে যাবে সমগ্র গ্রাম। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা ঘর ভেঙে দিচ্ছেন এবং জিনিস পত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন শুক্রবার সকাল থেকেই। ভিটেহারা সাধারণ মানুষ এখন পুর্নবাসন জন্য সরকারের কাছে দাবি রেখেছেন। খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন অসহায় পরিবারের সদস্যরা ।
যদিও প্রশাসনের দেখা না পাওয়ায় ক্ষোভ বৃদ্ধি হচ্ছে এলাকায়। কবে মিটবে এই ভাঙন তার দিকে তাকিয়ে আছেন এলাকার বাসিন্দারা।

