আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ২২ ডিসেম্বর:
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহেরিক-ই-মুজাহিদিনের অন্যতম সক্রিয় সদস্য জাভেদ মুন্সি ঘাঁটি গেড়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের ঠিক উল্টোদিকে ঢালি পাড়া এলাকায় নিজের শ্যালকের বাড়িতে আস্তানা নিয়েছিল সে। সেখানে বসে কোনো পরিকল্পনা সে করছিল কিনা সেটা ক্ষতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঢালি পাড়ার বাসিন্দা মোনাব্বর পিয়াদার বাড়িতে মাসখানেক আগে বাড়ি ভাড়া নেন গোলাম মহম্মদ নামে এক ব্যবসায়ী। মূলত কাশ্মীরের বাসিন্দা গোলাম। প্রতিবছর শীতেই চলে আসেন ক্যানিংয়ে। বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে শীতের কয়েকটা মাস থেকে এই এলাকায় শীতবস্ত্র বিক্রি করেন ঘুরে ঘুরে। দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর ধরে তিনি এভাবেই ক্যানিংয়ে এসে ব্যবসা করছেন। মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়ায় ঘর নেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানিংয়ে যাতায়াত করার কারণে বাড়ির মালিক সামান্য একটা চুক্তিপত্র করেই ঘর ভাড়া দিয়ে দেন। কিন্তু তাঁর ঘরে কে বা কারা যাতায়াত করতেন সেদিকে কোনো খোঁজ খবর রাখতেন না মোনাব্বর বা তাঁর পরিবার। আর এই সুযোগেই জাভেদ নিজের শ্যালক গোলামের বাড়িতে আসা যাওয়া করতে শুরু করে বলে দাবি তদন্তকারীদের। শ্রীনগরের বাসিন্দা জাভেদ দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি কার্যকলাপের সাথে যুক্ত বলে দাবি পুলিশের। তবে ক্যানিং এলাকায় কেন সে ঘাঁটি গেড়েছিল সেটা পরিস্কার নয়। এখানে কি কোন নেটওয়ার্ক তৈরির চেষ্টা করছিল সে? না কী এই জনবহুল এলাকায় কোন নাশকতার পরিকল্পনা সে করেছিল সেটা এখনও পরিস্কার নয়। তবে তদন্ত শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।
বাড়ির কর্ত্রী সুপ্রিয়া পিয়াদা বলেন, “আমরা সাধারণ ভাড়াটের মতই ঘর ভাড়া দিয়েছিলাম কয়েকমাসের জন্য। প্রতিবছর এসে এলাকায় ঘুরে ঘুরে শীতবস্ত্রের ব্যবসা করেন। তাই সন্দেহ হয়নি। কিন্তু এই জঙ্গি যোগ জেনে অবাক হয়েছি। পুলিশ তদন্ত করে সঠিক ঘটনা সামনে আনুক।”
এদিকে এলাকা থেকে জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ায় আতঙ্কিত এলাকার সাধারণ মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা রুস্তম আলি শেখ, অনন্ত দাসরা বলেন, “ভাবতেই পারছি না। মানুষকে বিশ্বাস করা যাবে না দেখছি। পাড়ার মধ্যে এত মানুষের ভিড়ে কিভাবে ঐ জঙ্গি লুকিয়ে ছিল ভেবেই পাচ্ছি না।”
যদিও জামাইবাবুর জঙ্গি যোগ মানতে চাননি গোলাম। তিনি বলেন, “দিন তিনেক আগে সে এসেছিল আমার কাছে। একসাথে মসজিদে নমাজ পড়তে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এসে দুপুরে বাড়িতেই খাওয়া দাওয়া করে। উনি জঙ্গি কার্যকলাপের সাথে যুক্ত আছেন বলে মনে হয় না। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।”