স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ৫ জুন: “ফেলনা দিয়ে খেলনা” পরিবেশ দূষন রোধে এই স্লোগান সামনে রেখে বাতিল জিনিসপত্র দিয়ে একে একে তৈরি করে চলেছেন সুন্দর সুন্দর সামগ্রী। রাস্তায় ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়েও তাঁর হাতের কারুকাজে তৈরি করছে মহাপুরুষদের কাট আউট, কখনও বা গৃহসজ্জার সামগ্রী কখনওবা শিশুদের মনোরনঞ্জনের খেলনা। রায়গঞ্জের বোগ্রাম এলাকার বাসিন্দা সমাজসেবী শিক্ষক বিপ্লব মন্ডলের এই উদ্ভাবনী প্রতিভার কদর করছেন এলাকার বাসিন্দারা। আর বিপ্লববাবুর এই সৃজনশীল ভাবনার অন্যতম কারন পরিবেশকে দূষণমুক্ত করা।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতা গড়তে একাধিক ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহন করেছিলেন রায়গঞ্জ বোগ্রামের বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বিপ্লব মন্ডল। নিজেই স্যানিটাইজার তৈরি করে সাধারন মানুষের মধ্যে বিতরণ ও স্যানিটাইজিং করার পাশাপাশি টিসু পেপার দিয়ে তৎক্ষনাৎ মাস্ক তৈরি করে পথচলতি মানুষের মুখে মাস্ক পড়িয়ে দেওয়া কিংবা করোনা সচেতনতামূলক বার্তা লেখা কাগজের ঘুড়ি তৈরি করে গ্রামগঞ্জের ছোট ছোট শিশুদের হাতে তুলে দিয়ে লক ডাউনের মাঝে তাদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা। এমনই অনেক সমাজ সচেতনতামূলক কাজ করে চলেছেন এই শিক্ষক।
এবারে তার ভাবনা ছিল মানুষ যেসব জিনিস বর্জ্য পদার্থ হিসেবে রাস্তায় ফেলে দেয় যেমন টুথপেষ্টের কাগজের খাপ, ধুপকাঠির প্যাকেট, পুরোনো গ্রিটিংস কার্ড বা বিবাহ অন্নপ্রাশনের কার্ড, ওষুধের খাপ এসব দিয়েই একের পর এক অনবদ্য শিল্প সত্তার জন্ম দিয়ে চলেছেন বিপ্লববাবু।
মানুষের ফেলে দেওয়া এসব জিনিস তিনি সংগ্রহ করে তৈরি করেছেন খেলনা ফুল, ফল, নানান সব্জি, গাছপালা, পশু পাখি, মানুষের আকৃতি, ঘর সাজানোর সামগ্রী। তাঁর হাতের নিপুন ছোঁয়ায় ফেলনা এসব জিনিস দিয়েই বহু মনীষীদের প্রতিকৃতি বা কাটআউট। শুধু তাই নয় শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য নানান বিস্কুটের খাপ দিয়ে বানিয়ে চলেছেন কার্টুন।
সৃজনশীল সমাজসেবী শিক্ষক বিপ্লব মন্ডল জানালেন, ফেলনা দিয়ে খেলনা তৈরি করা এই ভাবনা থেকেই তিনি কয়েক বছর ধরে নিজের ইচ্ছেতেই এই কাজ করে যাচ্ছেন। রাস্তায় ফেলে দেওয়া মানুষের এই অব্যবহার্য জিনিস পড়ে থাকলে পরিবেশ দূষণ হবে। সেই দূষণ প্রতিরোধ করার পাশাপাশি ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে কিছু সৃষ্টি করার নেশা তার এই কাজের মূল লক্ষ্য। শুধু তাই নয় তিনি তাঁর এই কাজের মধ্য দিয়ে সমাজের কাছে সচেতনতামূলক সামাজিক কিছু বার্তাও দিতে চান। বিপ্লব বাবুর এই ধরনের উদ্যোগ ও সমাজসেবামূলক কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত কমলাবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান প্রশান্ত কুমার দাস। তিনি বলেন, বিপ্লব বাবুর একেবারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সমাজ সচেতনতামূলক কাজ বহু মানুষকে সচেতন করবে।