আমাদের ভারত, ১৭ ফেব্রুয়ারি: হিজাব বিতর্ক এখন তুঙ্গে। উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেত্রী রুবিনা খাতুন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “হিজাবে হাত দিলে হাত কেটে নেব।” কিন্তু এর জবাবে বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন এই অতীত সংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম হওয়া উচিত পড়ুয়াদের একমাত্র পোশাক। তসলিমার অভিযোগ, হিজাব হলো সতীত্বের পাহারাদারি করা পোশাক, যা মনে করিয়ে দেয় মেয়েরা আসলে সম্ভোগের বস্তু।
যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ হবে কিনা তা নিয়ে মামলা চলছে কর্ণাটক হাইকোর্টে, তখন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাসলিমা বলেন, “একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের পোশাক হওয়া উচিত ধর্মীয় ভেদাভেদহীন। শিক্ষকরা রাজ্যে পড়ুয়াদের ধর্মীয় পোশাক পরে স্কুল কলেজে আসতে বারণ করেছেন। এর মধ্যে কোন ভুল নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধর্মচর্চা তথা ব্যক্তিগত ভাব অনুসরণের জায়গা নয়।”
বরং তসলিমা বলেন,” স্কুলে শেখানো হয় নাগরিকের অধিকার, লিঙ্গ সাম্য, মানবিকতা, আধুনিক মনোস্কতা, বিজ্ঞান ভাবনা ইত্যাদি।” তসলিমা নাসরিন দাবি করেন, “হিজাব, বোরখা বা নাকাব নারী নির্যাতনের প্রতীক। তাঁর মতে হিজাব, বোরখা, নাকাব আসলে দেখিয়ে দেয় যে, মেয়েরা যৌনবস্তু ছাড়া কিছু নয়। পুরুষদের থেকে মেয়েদের লুকিয়ে রাখা দরকার। নচেত তারা পুরুষের যৌনতার শিকার হবে। এই ভাবনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এমন ভাবনার দ্রুত অবসান হওয়া উচিত।”
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের একটা বড় অংশ হিজাবের পক্ষে। তাদের মতে হিজাব ইসলাম সম্প্রদায়ের মানুষের সম্মান ও ঐতিহ্যের পোশাক। এই প্রসঙ্গে তসলিমা জবাব দিয়ে বলেন, “বিষয়টা কেবল ইসলাম কেন্দ্রিক নয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে নিয়ম সতেরো শতকে তৈরি হয়েছিল তা একবিংশ শতাব্দীতে চলতে পারে না।” তসলিমা আরও বলেন, “হিজাব নাকাব, বোরখা কোনওটাই কিন্তু মেয়েদের পছন্দ করা পোশাক নয় বরং তাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল পুরুষরা।