Changur Baba, Uttar Pradesh, লক্ষ্য জনবিন্যাস বদল! নিশানায় গরিব হিন্দু মহিলা, ১৫০০- র বেশি ধর্মান্তরিত, সুইস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট ও একাধিক অনৈতিক কাজ, গ্রেফতার ছাঙ্গুর বাবা

আমাদের ভারত, ১০ জুলাই: তিনি নিজেকে ধর্মগুরু বলে দাবি করতেন। আর ধর্মীয় কার্যকলাপের আড়ালে নানা ধরনের অনৈতিক কাজকর্ম করতেন। তার বিরুদ্ধে
প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ জমা পড়েছে পুলিশের কাছে। উত্তর প্রদেশে তিনি ছাঙ্গুর বাবা, ওরফে পীর বাবা নামে পরিচিত। তার কাজে দেশ বিরোধিতার বিষয়টিও ধরা পড়েছে। ফলে উত্তর প্রদেশে তার প্রাসাদের মতো বাড়িটি বুলডোজার দিক গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

তদন্তে জানাগেছে, ছাঙ্গুর বাবা জোর করে প্রলোভন দেখিয়ে ১৫০০ জনেরও বেশি হিন্দু মহিলাকে এবং হাজার হাজার অমুসলিমকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করেছেন। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন থেকে জানাগেছে, পুলিশ মনে করছে, ছাঙ্গুর বাবা মূলত উত্তর প্রদেশের বলরামপুর জেলার মাধবপুরের বাসিন্দা। তিনি পরিকল্পিতভাবে দরিদ্র, বিধবা অসহায় মহিলাদের নিশানা করতেন ধর্মান্তরিত করার জন্য। নানা ধরনের প্রলোভনে কাজ না হলে হুমকি দিতেন বলেও অভিযোগ।

শুধু দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও তার যোগাযোগ রয়েছে। দুবাইতে তিনি যাতায়াত করতেন বলে জানাগেছে। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ছাঙ্গুর বাবার হাত ধরে একটা বড় ধর্মান্তকরণ চক্র চলত।

স্পেশাল ট্রাক ফোর্স বা এসটিএফ এই বাবার কাজকর্ম সম্পর্কে তদন্ত শুরু করে। পরে মামলাটি এটিএসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ছাঙ্গুরবাবার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়া ব্যক্তিদের সনাক্ত করছে তদন্তকারীরা। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছে যে, অনেক ব্যক্তি এই স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে সামনে আসতে বা সাক্ষ্য দিতে ভয় পাচ্ছেন।

সূত্রের খবর, ছাঙ্গুর বাবা মহারাষ্ট্রে এক বিস্তৃত নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন। মুম্বাইয়ের দর্গাগুলির চারপাশে কাজ করত সেই নেটওয়ার্ক। সেখানে তিনি তার প্রচারের জন্য আংটি বিক্রি করতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি উপসাগরীয় বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় আন্তর্জাতিক স্তরেও যুক্ত হয়ে যান। তার বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে।

চাঁদ আউলিয়া দরগায় বার্ষিক উরস অনুষ্ঠানের সময় ছাঙ্গুর বাবা বিদেশি অতিথিদের আপ্যায়ণ করতেন। আর এসবের মাধ্যমে অনেককে ধর্মান্তরিত করার জন্য প্রলুব্ধ করতেন।

স্থানীয় জনসংখ্যার বিন্যাসকে বদলে দিতে তিনি বলরামপুর এবং নিকটবর্তী জেলাগুলিতে ইসলামিক দাওয়া কেন্দ্র এবং মাদ্রাসা স্থাপনের পরিকল্পনা করেছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ কর্তারা জানতে পেরেছেন, ছাঙ্গুর বাবার প্রভাব স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপরেও বিস্তৃত ছিল। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, তিনি পুলিশ এবং স্থানীয় গোয়েন্দাদের ঘুষ দিয়েছিলেন। অন্যায় দেখে চুপ থাকার জন্য মিথ্যা মামলাও সাজাতেন এই ছাঙ্গুর বাবা।

বাবার সহযোগী নিতু ওরফে নাসরিনকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে এসটিএফ সাত দিনের হেফাজতে নিয়েছে। আইবি এবং এনআইএ বিদেশি তহবিলের হদিশ খুঁজে বের করতে এবং যোগ সূত্র খুঁজতে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে। নবীন ওরফে জামাল উদ্দিন এবং ছাঙ্গুর বাবার ছেলে মেহবুবকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা লাক্ষ্মৌ জেলে রয়েছে। তদন্তকারীরা আরো জানতে পেরেছেন, নবীন দুবাই থেকে প্রাপ্ত তহবিল দিয়ে বলরামপুরে জমি কিনেছিলেন। সুইস ব্যাঙ্কে নবীনের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এটিএস এখন ধর্মান্তকরণ কার্যকলাপ, আন্তর্জাতিক লেনদেন এবং ছাঙ্গুর বাবার বিস্তৃত নেটওয়ার্ক বিবরণ সম্পর্কে রেকর্ড উদ্ধারে ছাঙ্গুর বাবার মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলি স্ক্যান করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ছাঙ্গুর বাবার কার্যকলাপকে দেশ বিরোধী বলে অভিহিত করেছেন। উত্তরপ্রদেশ সরকার বুলডোজার ব্যবহার করে বলরামপুরে তার বাড়ি ভেঙ্গে ফেলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *