আশিস মণ্ডল, বীরভূম, ৫ ফেব্রুয়ারি: বছর দুয়েক ধরে ভালোবাসত একে অপরকে। নিজেরাই বিয়ের সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু বিয়ের খরচে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। তাদেরই ইচ্ছে পূরণ করল জয় মা তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দ। শনিবার রাতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের তিন জোড়া তরুণ-তরুণীর বিয়ে হল তারাপীঠে।
করোনা অতিমারির কারণে বছর তিনেক বন্ধ ছিল গণ বিবাহের আসর। করোনা কমতেই এবার তারাপীঠের তিন জোড়া মেয়ের বিয়ে দিল জয় মা তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দ। মুসলিম দম্পত্তি সাইনুল শা ও কমলা খাতুন। দুজনেরই বাড়ি তারাপীঠ থানার ফুলিডাঙা গ্রামে। দীর্ঘদিন থেকে তারা একে অপরকে ভালবাসত। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে বিয়ে তাদের কাছে ছিল আকাশ কুসুম বিষয়। বিষয়টি জানতে পারেন তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দের সদস্যরা। তারাই দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের ব্যবস্থা করেন। একই মঞ্চে বিয়ে দেওয়া হল কেরাব হেমরম ও মুংলি হাঁসদার এবং সুমন্ত মাল ও সুস্মিতা মালের। তিনটি ভিন্ন সম্প্রদায়ের বিয়ে দেওয়া হল তাদের রীতি মেনেই। শুধু বিয়ে নয়, তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে খাট, বিছানা, বেনারসি শাড়ি থেকে সোনার গয়না। বিয়ে হবে আর খাওয়াদাওয়া থাকবে না সেটা তো হয় না। তাই বর ও কনে পক্ষের জন্য ছিল বিরিয়ানি, চিকেন চাপ, খেজুর গুড়ের মিষ্টি, আইসক্রিম।
তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দের কর্ণধার কল্লোল সাহা বলেন, “এটা আমাদের ২০ তম গণবিবাহ। তারাপীঠ থেকেই গণবিবাহ শুরু করেছিলাম। পরবর্তীকালে দিঘা, সুন্দরবন এবং উত্তরবঙ্গে গণবিবাহের ব্যবস্থা করি। এখনও পর্যন্ত ৫০০ ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে পেরেছি। শীঘ্রই পুরীর সমুদ্র তটে বিয়ের ব্যবস্থা করব”।
সংস্থার সহ সম্পাদক বাপি সাহা বলেন, “বহু মানুষ অর্থের অভাবে ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে পারে না। আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করলাম। মানুষ প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। কিন্তু এই সমস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দুঃস্থ মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দ।”