আমাদের ভারত, কলকাতা, ৯ জানুয়ারি: বামপন্থী ছাত্র ছাত্রীদের রক্তপিপাসু হায়নার সঙ্গে তুলনা করলেন হিন্দু নেতা তপন ঘোষ। গতকাল বিশ্বভারতীতে বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত’কে প্রায় ৬ ঘন্টা আটকে রেখেছিল বামপন্থী ছাত্রছাত্রীরা। এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তপন ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, বামপন্থী ছাত্ররা কি তাঁর রক্ত পান করতে চেয়েছিল? একই সঙ্গে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মর্যাদাও বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করে রাজ্যের হাতে দেওয়া হোক, তা হলেই রাজ্যসরকার বুঝবে কতধানে কত চাল। তিনি রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, এখানে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের মত প্রকাশের কোনও স্বাধীনতা নেই, এখানে শুধু বামপন্থী এবং বিষ্ণুমাতাপন্থীদের রাজত্ব চলছে, গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। এব্যাপারে তিনি গতকালই প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মেল করেছেন।
তপন ঘোষের বক্তব্য, রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন আজ কলংকিত, গণতন্ত্র ভুলুন্ঠিত। বাঙালি যে কতখানি গণতন্ত্রপ্রেমী তা আজ শান্তিনিকেতনে ভালোভাবে দেখা গেল। অত্যন্ত সম্মানিত সাংবাদিক এমপি স্বপন দাশগুপ্ত’কে দীর্ঘ ৬ ঘন্টা ধরে ‘গণতন্ত্রপ্রেমী’ ছেলেমেয়েরা রক্তপিপাসু হায়েনার মত আটকে রাখল। যেন তিনি বের হলেই ওরা তাঁর রক্তপান করবে।
তাঁর দোষ? তিনি “সংশোধিত নাগরিকতা আইন বিষয়ে” বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কর্তৃক নিমন্ত্রিত হয়ে সেখানে বক্তৃতা করতে গিয়েছিলেন। স্বপনবাবু যেহেতু দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির দিকে আছেন তাই তাঁর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তো এই প্রগতিশীল বাংলায় থাকতে পারে না! এখানে তো শুধু ‘বামপন্থী ও বিষ্ণুমাতাপন্থীদের’ই মতপ্রকাশের অধিকার আছে। তা সে কেন্দ্রীয় সরকারের বিপুল টাকায় যাদের পেট চলে সেই বিশ্বভারতী প্রাঙ্গণ হলেও।
চূড়ান্তভাবে অপমানিত ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত স্বপন দাশগুপ্ত বা তাঁর সরকার এরপর কী করবেন তা আমি জানি না। কিন্তু আমার মতে, অসভ্যতার সব সীমা আজকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ’র কাছে আমার সর্বশক্তি দিয়ে আবেদন করতে চাই, বিশ্বভারতী-র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বাতিল করা হোক এবং এই নোটিফিকেশন জারি করে দিয়ে রাজ্য সরকারকে বলে দেওয়া হোক যে রাজ্য যদি চায় তাহলে রাজ্য এই বিশ্ববিদ্যালয়কে অধিগ্রহণ করতে পারে। কত ধানে কত চাল বোঝানোর আর কোনও উপায় অবশিষ্ট নেই।
এই পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আজকের রক্তপিপাসু হায়েনারাই রাবীন্দ্রিক নাকেকান্না শুরু করে দেবে। বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা লুঙ্গি ড্যান্স করতে ময়দানে নেমে পড়বে। তাকে বিন্দুমাত্র পাত্তা না দিয়ে মোদী – অমিত শাহ দৃঢ়তার পরিচয় দিন। সারা দেশের জাতীয়তাবাদী মানুষ ওঁদের কাছে এখন এই দৃঢ়তা দেখতে চাইছে। এটাই সময়ের দাবি।