পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ৯ নভেম্বর :
নৃশংসভাবে ভাবে দুই শিশুকন্যাসহ একই পরিবারের ৫ সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের দাবি উড়িয়ে খুনের জোরালো অভিযোগ মৃতের দিদির। তদন্ত ছাড়াই এই ঘটনাকে কেন আত্মহত্যা বলে দায় এড়াচ্ছে পুলিশ সে প্রশ্ন তুলে সরব মৃতের দিদি ললিতা সরকার। ঘটনার প্রকৃত তদন্ত চেয়ে এদিন তপন থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন বলেও জানিয়েছেন ওই মহিলা। এদিকে সোমবার সকালে তপন থানার ওসির নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী এলাকায় গিয়ে ফরেনসিক টেস্টের জন্য সিল করে দিয়েছেন মৃতের বাড়ি। লাল ফিতে দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে বাড়ির চারপাশও। একইসাথে সুনির্দিষ্ট দপ্তরের কাছে ঘটনার তদন্তের জন্য একটি আবেদনও পাঠানো হচ্ছে তপন থানার পুলিশের তরফে বলে সুত্রের খবর। রবিবার সকালে তপনের চন্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জামালপুরে এক নৃশংস ঘটনা সামনে আসে। দুই শিশু সহ একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে মেরে ফেলার পাশাপাশি একজনকে ঝুলিয়ে মেরে ফেলার ঘটনাও সামনে আসে। যার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসতেই প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এই ঘটনাকে মানসিক অবসাদ গ্রস্থ হয়ে পরিবারের সদস্যদের খুন করে নিজে আত্মহত্যা করেছে বাড়ি মালিক অনু বর্মন বলে চালিয়ে দেবার চেষ্টা করে।
পুলিশের এমন যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে খুনের জোরালো অভিযোগ আনেন মৃতের দিদি। একই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন স্থানীয়রাও। কেননা তাদের দাবি মৃতদেহ উদ্ধারের পর বেশকিছু ঘটনা খুনের অভিযোগকেই জোরালো করেছে। যার মধ্যে অন্যতম বাড়ির মালিক মৃত অনু বর্মনের হাতে কলম দিয়ে লিখে রাখা চারজনের নাম এবং ঘটনার পরেই এলাকা থেকে তাদের বেপাত্তা হওয়া। শুধু তাই নয়, দুদিন ধরে তারা হুমকিও দিচ্ছিল বলেও সেই লেখায় উল্লেখ করেছেন মৃত অনু। আর যাকে ঘিরেই খুনের অভিযোগই স্পস্ট হয়েছে বলে দাবি তাদের। শুধু তাই নয়, পরিবারের সকলকে খুন করে নিজে আত্মহত্যা করলে ঘরের আলমারি থেকে সোনাদানা সহ টাকাপয়সা কিভাবে গায়েব হলো সেই প্রশ্নও তুলেছেন মৃতের দিদি। তার দাবি, ভাই সমস্ত কিছু আলোচনা করেই কাজ করতো। লক্ষ্মীপুজোর দিন কেনা তাদের সোনার গহনা সহ আলমারিতে রাখা সমস্ত অলঙ্কারও উধাও হয়েছে। একইসাথে নগদ দেড় লক্ষ টাকাও আলমারি থেকে গায়েব। পরিকল্পিতভাবে সকলকে খুন করে সোনার গহনা, টাকা-পয়সা নিয়েই চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। যাদের নামই তার ভাই হাতে লিখে গিয়েছেন। প্রকাশ্যে এমন সব বিষয় আসলেও পুলিশ কেন তাদের গ্রেপ্তার করছে না সে প্রশ্ন তুলেও এদিন সরব হয়েছেন ওই মহিলা।
তপন থানার ওসি সৎকার সংবো জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি। এই ঘটনায় ফরেনসিক তদন্তের জন্য নির্দিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। বর্তমানে মৃতের বাড়ি সিল করে চারদিক থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে ।