পারুল খামারিয়া, আমাদের ভারত, বারাসত, ১৫ মার্চ:শুক্রবার ছিল দোলযাত্রা। এই দিনই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ফাল্গুনী পূর্ণিমা তিথিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই দিনই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাধার মুখে প্রথম রঙ দিয়েছিলেন। হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকার আগুনে পুড়ে মৃত্যুর পর ভগবান বিষ্ণু নৃসিংহদেবের রূপ ধারণ করে হিরণ্যকশিপুকে হত্যা করেন। অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির বিজয় সূচিত হয় এই দিনই। এই দিনের মাহাত্ম্য অনেক।
হোলিকা দহন বা হোলিকাকে যেমন আগুনে পোড়ানো হয়েছিল তেমন ক’রে অশুভ শক্তিকে পুড়িয়ে শুভ শক্তির জয় ঘোষণা করতে হবে, এই বার্তা দিতেই এদিন ‘সাহিত্য-সংস্কৃতি ও গৌরব সম্পাদনী’ সভা আয়োজিত হয়েছিল ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর পক্ষ থেকে হৃদয়পুরের ‘প্রণব কন্যা সংঘ’-এ। এই সভায় আশ্রমের সন্যাসীনী মাতা ও আশ্রম বালিকা এবং ভক্তরাও অংশগ্রহণ করেন।
এ দিন শুরুতেই হরিনাম সংকীর্তন করা হয়। তারপর গীতি – আলেখ্য পরিবেশন করেন অরূপা দত্ত, রুনু দত্ত, তন্দ্রা দত্ত ও সন্যাসীনী আত্মস্থানন্দময়ী মাতা। একটি একক গীত পরিবেশন করেন তনিমা সাধুখাঁ।
আবৃত্তি করেন ছন্দা হালদার ও দিলীপ বিশ্বাস। সুমন রায় শ্রীচৈতন্যদেবের কাজী দলনের কথা পাঠ করে শোনান। ড: কল্যাণ চক্রবর্তী দোল যাত্রার গুরুত্ব ও ভেষজ আবীর তৈরি করার কথা বলেন। কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি আবীরে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিলন খামারিয়া বলেন, দোলযাত্রা সারা দেশ জুড়েই পালিত হয়েছে। কিন্তু কতিপয় স্থানে অশুভ শক্তিরা এই আনন্দ উৎসবে বাধা দান করার চেষ্টা করেছে আমাদের রাজ্যে ও দেশের কিছু জায়গায়। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে হবে। বিদেশি ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ নয়, দোলযাত্রা হোক বাঙালি তথা ভারতবাসীর ‘প্রেম দিবস’। নিজের সংস্কৃতি পালনের মধ্যে গৌরব আছে। এই বার্তা সমাজের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই আমরা এই সাহিত্য সভার আয়োজন করেছিলাম।
এই অনুষ্ঠানে সংঘের পক্ষ থেকে হোম-যজ্ঞ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে প্রসাদ দেওয়া হয়।