আমাদের ভারত, ২৫ ডিসেম্বর: গীতা পাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেললে তোমরা স্বর্গের আরো নিকটবর্তী হইবে…. স্বামী বিবেকানন্দের এই উক্তি নিয়ে রবিবার সরগরম ছিল রাজ্য রাজনীতি। রবিবার ব্রিগেডে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ অনুষ্ঠানকে কটাক্ষ করতে তৃণমূল টেনে এনেছিল বিবেকানন্দের বাণীকে। আর তৃণমূলকে পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতির মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয় তুমুল বিতর্ক। তৃণমূল অভিযোগ করে, সুকান্ত মজুমদার স্বামীজিকে অপমান করেছেন। তাকে ক্ষমা চাইতে হবে এরজন্য। কিন্তু এর পাল্টায় সুকান্ত মজুমদারের দাবি, টেট পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে তার মন্তব্যকে ইচ্ছে করে বিকৃত করা হয়েছে। তাঁর দাবি, রবিবার তিনি যা বলেছেন তার অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তৃণমূলের নেতারা বিবেকানন্দের বাণীর আগে পিছে না পড়ে মন্তব্য করেন বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি
রবিবার ব্রিগেডে সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, বাংলা দীর্ঘদিন ধরে সনাতন ধর্ম ও ভক্তি আন্দোলনের পিঠস্থান। তবে মাঝেমাঝে বামপন্থীদের আন্দোলনের কারণে বাংলা কিছুটা বেসামাল হয়ে গিয়েছিল। অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী। যারা বলেছেন ফুটবল খেলা গীতা পাঠ অপেক্ষা ভালো, তারা বামপন্থী প্রোডাক্ট। সুকান্তবাবুর এই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করে তৃণমূল সাংবাদিক সম্মেলন করে স্বামীজীকে অপমান করেছেন বলে সরব হন বিজেপির রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে। এর জন্য তৃণমূলের তরফে সুকান্ত মজুমদারকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়।
কিন্তু সুকান্ত মজুমদারের দাবি, তিনি যা বলেছেন তাতে কোনো ভুল নেই, তার মন্তব্যকে বিকৃত ভাবে প্রকাশ করেছে একটি সংবাদ মাধ্যম। সুকান্ত মজুমদার বলেন, টেটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, সেটা থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য এই সমস্ত নাটকবাজি করা হচ্ছে। তাঁর কথায় “আমি কাল যা বলেছিলাম, আমি আজও তাই বলছি। তাঁর অভিযোগ, তার বক্তব্যটির কিছু অংশ কেটে বাদ দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের একটি চ্যানেলে দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, “সেখানে পরিষ্কার বলা আছে ‘এখন যারা বলছে’…. ‘এখন’ তো বিবেকানন্দ নেই, আর ‘যারা’ মানে একজন ব্যক্তি নয়।” তিনি আরও বলেন, বিবেকানন্দের বাণীটাকে যারা বিকৃত করে প্রকাশ করছেন তাদের এখনো আমি বলছি অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা শুধুই দুটো লাইন পড়েছেন। আগে পিছে কিছুই পড়েননি। আগে পিছে লাইনগুলো পড়ুন। বিবেকানন্দ পরিষ্কার বলছেন, দুর্বল শরীরে গীতা ধারণ করতে পারবেন না। ফুটবল খেলে শক্তিশালী হলে, গীতার বাণীকে আরো বেশি করে সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে। সেইজন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতা অর্জুনকে দিয়েছিলেন তার বন্ধু সুদামাকে নয়।”
প্রসঙ্গত, রবিবারের মন্তব্যে সুকান্ত মজুমদারকে কখনোই স্বামী বিবেকানন্দের নাম উল্লেখ করতে শোনা যায়নি।