আমাদের ভারত, ২৬ আগস্ট: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো মারুতি সুজুকির প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ির উৎপাদন। গুজরাটের হানসালপুরে নতুন উৎপাদন কারখানার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, জাপানের রাষ্ট্রদূত কেইইচি ওনো, সুজুকি মোটর করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট তোশিহিরো সুজুকি সহ সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকরা। কারখানা উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে বড় ঘোষণা করেছেন তোশিহিরো সুজুকি। তিনি জানান, আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে ভারতে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে সুজুকি মোটর কর্পোরেশন। এই বিনিয়োগের লক্ষ্য দেশের ইলেকট্রিক গাড়ির উৎপাদনকে গতি দেওয়া এবং বিকশিত ভারত গড়ার অভিযানে পাশে থাকা।
তোসিহিরো সুজুকি বলেন, গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতের বিকাশ যাত্রায় আমরা গর্বের সঙ্গে সঙ্গী হয়েছি। এবার ভারতে সবুজ টেকসই পরিবহনের লক্ষ্যে আরো বড় ভূমিকা নিতে চাই। তিনি জানান, উদ্বোধন হাওয়া হানসালপুর কারখানাটি কেবল ভারতের নয়, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অটোমোবাইল উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এখানে প্রতিবছর প্রায় ১০ লক্ষ গাড়ি তৈরীর ক্ষমতা গড়ে তোলা হবে। এই কারখানার প্রথম উৎপাদিত গাড়ি হবে মারুতি সুজুকি ই-ভিটারা যা সংস্থার প্রথম ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক এসইউভি।
ভারতীয় বাজারের পাশাপাশি গাড়ি রপ্তানি করা হবে ইউরোপ, জাপান সহ একশোর বেশি দেশে। এর ফলে ভারত বিশ্ব ইলেকট্রনিক গাড়ির মানচিত্রে এটি বড় জায়গা করে নেবে বলে আশা শিল্প মহলের।
শুধু ইলেকট্রিক গাড়ি নয়, এই উদ্যোগের আরেকটি বড় সাফল্য, ভারতের প্রথম লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ও সেল উৎপাদন। তোশিবা, ডেনশো, সুজুকির যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ব্যাটারি ব্যবহার করা হবে মারুতি সুজুকির হাইব্রিড গাড়িতে। যেমন গ্রান্ড ভিটারায়।
জানাগেছে, ব্যাটারির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এবং কিছু সেমিকন্ডাক্টর যন্ত্রাংশ ছাড়া প্রায় সব কিছুই ভারতের মাটিতেই তৈরি হচ্ছে।
উদ্বোধনের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণেশ উৎসবের আবহে আজ ভারত মেক ইন ইন্ডিয়া যাত্রায় নতুন অধ্যায় যোগ হলো। এটি আমাদের মেক ইন ইন্ডিয়াকে, মেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ডের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এক বড় পদক্ষেপ। আজ থেকে ভারতে তৈরি ইলেকট্রিক গাড়ি ১০০ দেশে রপ্তানি হবে। সেই সঙ্গে শুরু হচ্ছে হাইব্রিড ব্যাটারি ইলেকট্রোলাইট উৎপাদন।
অতীতেদের প্রসঙ্গ টেনে মোদী স্মরণ করেন, গুজরাটে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়কার ঘটনা। তাঁর কথায়, ভারতের এই সাফল্যের বীজ রোপিত হয়েছিল তেরো বছর আগে। যখন আমরা মারুতি সুজুকিকে জমি বরাদ্দ করেছিলাম। ২০১২ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন হানসালপুরের এই জমি দেওয়া হয়েছিল। শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে সুজুকির এই বিনিয়োগ ভারতের ইলেকট্রিক গাড়ির ভবিষ্যৎকে আরো উজ্জ্বল করবে। একইসঙ্গে দেশের শিল্প ও কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।