আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বোলপুর, ১৮ নভেম্বর: বীরভূমের কির্ণাহারে দাঁড়িয়ে কেষ্ট, কাজলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জানিয়ে গেলেন, ‘এমন কিছু করবেন না, যাতে আমাকে দু’দিনের মধ্যে পুনরায় বীরভূমে আসতে হয়। বড় বড় মস্তানদের সঙ্গে আমি লড়াই করেছি। আপনারা তাদের তুলনায় কিছু না’।
ভারতরত্ন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৫০তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে “এক ভারত আত্মনির্ভর ভারত” -এর লক্ষ্যে “একতা যাত্রা”য় যোগ দিতে মঙ্গলবার বীরভূমের কীর্ণাহারে আসেন শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম ও বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা এবং শ্যামাপদ মণ্ডল। প্রথমেই কির্ণাহার শহরে একটি শোভাযাত্রায় পা মেলান। কির্ণাহার ২ অঞ্চল অতিক্রম করার সময় তৃণমূলের কার্যালয় থেকে জয় বাংলা এবং চোর চোর স্লোগান দেওয়া হয়। যদিও সেদিকে কর্ণপাত করেননি শুভেন্দু অধিকারী।
শোভাযাত্রা শেষে কীর্ণাহার বাস স্ট্যান্ডে কার্যকর্তাদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বীরভূম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জেলা। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্মভূমি। সেই জেলায় চলছে ‘লুটশ্রী’ প্রকল্প। বীরভূম জেলার প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি। ৭২ লক্ষ শৌচালয় দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু গ্রামগঞ্জেরর মানুষ পাননি। বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের জন্য প্রধানমন্ত্রী কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন। কিন্তু এখানে নল আছে জল নেই। উত্তরপ্রদেশ ঠাণ্ডা হয়ে গিয়েছে। বিহারে জঙ্গল রাজ খতম। “সামসা মে আলু, বিহারের লালু,” এই প্রবাদ ধ্বংস হয়েছে। এবার বাংলা। এখানে কেষ্ট, কাজল বড় মস্তান? নন্দীগ্রামে বড় বড় মস্তানের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়েছি। এরা কিছুই না”।
এরপরেই নাম করে কেষ্ট, কাজলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “গুন্ডাদের বলে গেলাম এমন কিছু করবেন না যাতে দু’দিনের মধ্যে আমাকে ফের এখানে আসতে হয়। আমাকে আটকাতে পারবেন না। মঙ্গলকোটে ডাবলু আনসারিকে চ্যালেঞ্জ করেছি। আপনারা কিছুই না। আমি নানুরের দায়িত্বে আছি। দেখা হবে কাজল এবং তাঁর দাদা সাহানেওয়াজের সঙ্গে। সব থেকে বেশি যেখানে ঝামেলা হবে সেখানেই আমি পোঁছে যাব”। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “আমি নন্দিগ্রাম না করলে আপনাদের দিদি, দিদি থেকে দিদিমা হতেন। সেই নন্দিগ্রামে আমি উনাকে হারিয়েছি। এবার ভবানিপুরেও হারাব। আমাকে আটকাতে পারবেন না।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মধ্যপ্রদেশ বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সুমিত্রা বাল্মীকি। কর্মী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এখন বাংলার পালা। বিহারের শিক্ষিত জাতীয়তাবাদী মুসলিমরাও মোদীজিকে সমর্থন করতে এগিয়ে এসেছেন। তাই বাংলায় আওয়াজ তুলুন মমতাকে ভোট না দেওয়ার। এখানকার জাতীয়তাবাদী মুসলিমরা, যারা বোমা তৈরি করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত, তাদের মোদীজির উন্নয়নমুখী রাজনীতিতে যোগ দেওয়া উচিত। এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং তৃণমূলকে তাড়ানোর সময়।”
তিনি আরও বলেন, “এসআইআর-এ ভারতীয় মুসলিমদের চিন্তার কিছু নেই। তারা আমাদের ভোট না দিলেও, আমরা চাই তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হোক কারণ তারা ভারতীয়। কিন্তু বাংলাদেশি রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাদ দেওয়া হবে।”

