আমাদের ভারত,২৪ নভেম্বর:সরকার গঠনের পরও শেষ হলো না মহারাষ্ট্রের মহাভারত। শনিবার ঘুম থেকে উঠেই মহারাষ্ট্রবাসী দেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে ফেলেছেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। আর তারপরই মহারাষ্ট্রের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শিবসেনা কংগ্রেস এনসিপি। দাবি করেন তাদের জোট সরকার গড়বে। কারণ বিজেপির কাছে সংখ্যা গরিষ্ঠতা নেই। একইসঙ্গে তারা দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন এবং নবনির্মিত সরকারকে একদিনের মধ্যে আস্থা ভোট করানোর দাবি জানিয়ে আবেদন জানান।
তড়িঘড়ি রবিবার সকালে এই মামলার শুনানি শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনভি রামান্না, সঞ্জীব খান্না, অশোক ভূষণের ডিভিশন বেঞ্চ উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন। আদালত সোমবার সকালে সরকার গঠনের আবেদন করে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের দেওয়ার চিঠি, মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের দেওয়ার নির্দেশ নামা সুপ্রিম কোর্টে জমা করার নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। সেগুলি খতিয়ে দেখার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
কংগ্রেস এনসিপি শিবসেনার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন কপিল সিব্বল অভিষেক মনু সিংভি, বিজেপির পক্ষের আইনজীবী মুকুল রহতগি, সরকারপক্ষের আইনজীবী তুশার মেহতা।
কপিল সিব্বাল রাজ্যপালের জারি করা নির্দেশনামা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ কংগ্রেস এনসিপি শিবসেনা জোট বাঁধার কথা ঘোষণা হয়। শনিবারে তারা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের আবেদন করবে বলে জানা যায়। ঠিক তার পরের দিন ভোরে আচমকা প্রত্যাহার হয়ে যায় রাষ্ট্রপতি শাসন। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মুখ্যমন্ত্রী এবং এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার উপ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে দেখা যায় রাজভবনে। এক্ষেত্রে রাজ্যপালের ভূমিকা মেনে নেওয়া যায় না। একইসঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহারের আগে কোন ক্যাবিনেট মিটিং করা হয়নি। অন্যায় ভাবে সংখ্যালঘু সরকারকে শপথ গ্রহণ করানো হয়েছে। তাই আজই নতুন সরকারকে বিধানসভায় আস্থা ভোটে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দিক আদালত।
অন্যদিকে অভিষেক মনু সিংভি বিজেপিকে সমর্থন করে আজিত পাওয়ার যে এনসিপি বিধায়কদের সই করা চিঠি জমা দিয়েছেন তা অবৈধ বলে দাবি করেন। তিনি বলেন ইতিমধ্যে বিধায়করা অজিত পাওয়ার তাদের ভুল বুঝিয়েছিল সেই অভিযোগ জানিয়ে শরদ পাওয়ারকে চিঠি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি কর্ণাটকের উদাহরণ টেনে বলেন সুপ্রিম কোর্ট একই ভাবে মহারাষ্ট্রে ফ্লোর টেস্টের ব্যবস্থা করুক।
সরকার পক্ষের আইনজীবী তুশার মেহতা এ বিষয়ে কিছুটা সময় দেওয়ার আবেদন জানান। তার বক্তব্য শনিবার রাতে মামলাটি বিষয়ে তাকে জানানো হয়েছে, কাগজপত্র খতিয়ে না দেখে তিনি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবেন না।
কিন্তু বিজেপির আইনজীবী মুকুল রহতগি অভিযোগ করে তিন সপ্তাহ ধরে আলোচনা চালালেও শিবসেনা এনসিপি কংগ্রেসের জোট সরকার গঠন করতে দেরি করেছে। মানুষের অসুবিধা হলেও সরকার গঠনের জন্য তারা কিছুই করেনি। তাই বাধ্য হয়ে বিজেপিও এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার বাধ্য হয়ে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। রহতগি বলেন,সংবিধানেরর ৩৬১নং ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল কোন আদালতে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন। এই ঘটনার ক্ষেত্রে তাই মেনে চলা উচিত বলে তিনি দাবি করেন।