রাজেন রায়, কলকাতা, ২ নভেম্বর: ২০১৯ সালে রবীন্দ্র সরোবরে ছটপূজা যাতে না হয়, তার জন্য শহরের ১১ টি ঘাট প্রস্তুত করে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা করেছিল রাজ্য প্রশাসন। তা সত্ত্বেও গেটের তালা ভেঙে ছটপুজোর জন্য ঢুকে পড়েছিলেন পুণ্যার্থীরা। কিন্তু চলতি বছরে সমস্যা বাড়াতে না চেয়ে রবীন্দ্র সরোবরেই ছটপূজা করতে চেয়ে ন্যাশানাল গ্রিন ট্রাইবুনালে আবেদন করে রাজ্য। যদিও সেই দাবি খারিজ করে দেয় জাতীয় পরিবেশ আদালত। এবার তাদের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশের আবেদন করলেও তা খারিজ করে উলটে ট্রাইবুনালের নির্দেশ মানার জন্য নোটিশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট।
প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের মতে, সরাসরি রাজ্য প্রশাসন বললেও এ রাজ্যের মানুষ শুনছেন না।
তাই সরাসরি মুখে না বললেও পুণ্যার্থীদের সমর্থন করেও সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধ রায় আদায় করে নিল রাজ্য। কোনওদিন কোনও আদালতই পরিবেশ দূষণের পক্ষে রায় দিতে পারে না। ২০১৯ সালে রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো বন্ধ করতে চেয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে রাজ্যের। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে যেখানে করোনা মহামারী সংক্রমণের সময়েও রাজ্য দুর্গাপূজা বন্ধ করতে চায়নি, সেখানে ছট পুজোর পুণ্যার্থীদের চটাতে নারাজ রাজ্য। তাই ছট পুণ্যার্থীদের পক্ষে রবীন্দ্র সরোবরে পুজোর আবেদন জানালে তাতে সাধারণ মানুষজনের পক্ষেও থাকা হবে, আবার সর্বোচ্চ আদালত বারণ করলে সেখানে পুজো বন্ধ করতে বাধ্য প্রশাসন। না হলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত অবমাননার দায়ে পড়বেন খোদ পুণ্যার্থীরাই। এতে সাপও মরল, লাঠিও ভাঙল না।
কয়েক দশক ধরেই লক্ষ লক্ষ মানুষ কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজোর দিন ভিড় জমান। সরোবরের জলে নেমে পুজো ছাড়াও চলে দেদার বাজিপটকা ফাটানোর কাজ। সব মিলিয়ে গোটা রবীন্দ্র সরোবর এলাকা ছট পুজোর জেরে অন্তত ৪-৫ দিন চরম দূষণের কবলে পড়ে। তা নিয়েই রাজ্যের পরিবেশবিদরা মামলা করেছিলেন ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালে। স্বাভাবিক ভাবেই পক্ষে মতামত দেয়নি গ্রিন ট্রাইবুনাল। সেই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে সিএমডিএ। তাই সিএমডিএ-র বিরুদ্ধে রায়ে রাজ্য প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্যের জয় হল বলে মনে করছেন অনেকে।