শ্রীরূপা চক্রবর্তী, আমাদের ভারত, ২৬ আগস্ট: মঙ্গলে উষা, বুধে পা, কেষ্ট এবার জেলে যা। খনার এই বচন বলে যে ভবিষ্যতবানী অনুব্রত মণ্ডলের জন্য সুকান্ত মজুমদার করেছিলেন, তা একেবারে অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছিল। এবার ববি হাকিমের জন্য যে মন্তব্য করেছেন, তাও কি ভবিষ্যতে ফলতে চলছে? এই প্রশ্ন এবার ঘুরতে শুরু করেছে আম জনতার মুখে। তাহলে কি এবার ববির পালা?
দুর্নীতির শেকড় খুঁজতে তদন্ত করতে কালীঘাট পর্যন্ত যাবে। এমনই দাবিতে রাজ্যের বিরোধীরা প্রথম থেকে সরব। এই দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। তাই দুর্নীতির মাথা হিসেবে অভিষেক এবং মমতাকে নিশানা করে অভিযোগও করেছেন বারবার তারা। তার মধ্যেই বিজেপি রাজ্য সভাপতির মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় অনুব্রত মণ্ডলের পর এবার মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের জেলে যাওয়ার পালা বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
এর আগে খনার বচন স্মরণ করিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, কেষ্ট বৃহস্পতিবার জেলে যাবে। দেখা যায় বৃহস্পতিবার সিবিআই অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে বিরাট কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গিয়ে। এবার বহরমপুরে বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার ডাকে “চোর ধর জেল ভরো” শীর্ষক সভায় সুকান্ত মজুমদার বলেন, “তৃণমূলে অনেক চোর, তালিকা লম্বা। কেউ ছাড় পাবে না। পার্থ গিয়েছে কেষ্ট গিয়েছে এবার ববি যাবে।”
বিজেপি রাজ্য সভাপতির আরও মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী হয়েও জানতে পারছেন না কে কত টাকা নিয়েছে।” তবে বিজেপি সভাপতির এই মন্তব্যে তৃণমূলের তরফে প্রতিবাদ করে বলা হয়েছে, সিবিআই এর মত স্ব-শাসিত নিরপেক্ষ সংস্থা কাকে ধরবে, কাকে ডাকবে সেটা তারা নিজেরা ঠিক করবে। এসব দেখে মনে হচ্ছে বিজেপির নির্দেশে তারা পরিচালিত হচ্ছে। ববি হাকিম অবশ্য আগেই বলে রেখেছেন, তিনি কোনো অন্যায় অনৈতিক কাজে যুক্ত নন। তেমন কিছু প্রমাণিত হলে তিনি নিজেকে মৃত্যুদণ্ড দেবেন।
তবে পার্থ আর কেষ্টর পরে যে এবার নিশানায় ফিরহাদ তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত সম্পত্তি মামলায় তার নাম জড়িয়েছে। ইডিকে ওই মামলায় পার্টি করার আদালতের নির্দেশ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে, সুকান্ত নিজের দলের নেতাকর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন দলের প্রতিটা মন্ডল অফিসের সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে দিন। গোপনে তোলাবাজি বন্ধ করুন। গোপনে এসে বলতে বলুন কে কত টাকা নিয়েছে। তৃণমূলের যারা টাকা তোলে তাদের তালিকা তৈরি করুন। একই সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে লাঠি নিয়ে বুথ আগলে রাখার ডাক দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।