পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ১৪ নভেম্বর: পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুলিশ যদি তৃণমূল কর্মীদের মতো আচরণ করে, ভোট লুট করতে সাহায্য করে। তাহলে তৃণমূল কর্মীরা ভোট লুট করতে এলে যে ব্যবহার করা হয় পুলিশের সঙ্গেও সেই ব্যবহার করা হবে। এই হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাই পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, চাকরি বাঁচাতে যেটুকু করতে হয় এর বেশি করবেন না। পশ্চিম মেদিনীপুরের কুশবসানের গৈতাতে পঞ্চায়েত কার্যকর্তা সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দিলেন সুকান্ত মজুমদার।
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী কুশবসানের গৈতাতে সভা করেন সুকান্ত মজুমদার। সভা শুরুর আগে বাইক মিছিল করে গৈতার সভাস্থলে তাকে নিয়ে আসেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। এদিনের এই কর্মসূচিতে এলাকার এলাকার প্রায় হাজার খানেক বিজেপি কর্মী সমর্থক অংশগ্রহণ করেন। সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা সাত মাস টাকা বন্ধ করে রেখেছি, তাই এখন দিল্লি ছুটছে, বলছে টাকা দেন, টাকা দেন। রাজ্য সরকারের টাকা নেই। তাই সব কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। টাকা দেব কিন্তু খরচের হিসাব দিতে হবে এবং কোনও প্রকল্পের নাম বদলানো চলবে না। প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা’কে বাংলা সড়ক যোজনা করা চলবে না। এরকম করলেই আবার বন্ধ করে দেওয়া হবে, আর কোনদিনও টাকা দেওয়া হবে না। বিজেপির পঞ্চায়েত যেখানে থাকবে সেই পঞ্চায়েতে প্রধানমন্ত্রীর নাম থাকবে আর কোথাও টাকা দেওয়া হবে। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলো চোরেদের ঘাটি। কোটি কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে এরা কাজ করছে না, টাকা চুরি করছে সব। পঞ্চায়েত প্রধানরা এমন বাড়ি বানিয়েছে যে লোকেরা এখন আগ্রার তাজমহল দেখতে যাবে না পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি দেখতে যাব। আগে এরা কি করত? এই নেতাদের কেউ ছোটখাট কাজ করত, কেউ মোটর মেকানিক ছিল, কারও একটা ছোট দোকান ছিল, এখন সে কোটি টাকার মালিক।
অনুব্রত মণ্ডল মাগুর মাছ বিক্রি করতো৷ তার মেয়ের একাউন্টে কোটি টাকা। তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছি যুবকদের মাগুর মাছ বিক্রির ট্রেনিং দিন। তাহলে রাজ্যে আর বেকার থাকবে না। মাগুরমাছ বিক্রি করে কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবে। কিন্তু এ মাগুর যে সে মাগুর নয়, জোড়া ফুলের মাগুর। যারা টেন্ডার পাবে তারাই বিক্রি করে বড়লোক হওয়ার সুযোগ পাবে, আপনি সেই সুযোগ পাবেন না।” সুকান্ত মজুমদার কটাক্ষ করে বলেন, “এখন মাগুর মাছ বেরোচ্ছে। রোজ মাগুর মাছের ঝোল খাওয়াচ্ছে। ডিসেম্বর মাসটা আসতে দিন, তখন দেখবেন শীতে এই সরকার কাঁপবে। সময় আসতে দিন আর বেশিদিন আয়ু নেই এই সরকারের। মুখ্যমন্ত্রীও ভয় পাচ্ছেন। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচন করার সাহস পাচ্ছেন না।” কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, “আপনারা তৈরি হন, তৃণমূল কংগ্রেসকে প্রতি বুথে হারাতে হবে।”
এর পরেই পুলিশের উদ্দেশ্য তাঁর হুঁশিয়ারি, “পুলিশকে বলে যাই, চাকরি বাঁচাতে আপনার যতটুকু দরকার ততটুক করবেন। তৃণমূলের ক্যাডারের মতো কাজ করবেন না। তৃণমূলের ক্যাডারের মতো কাজ করলে, তৃণমূল কর্মীরা ভোট লুট করতে এলে তাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয় আপনাদের সঙ্গেও সেই আচরণ করা হবে। তখন কিন্তু আমাদের দোষ দিতে পারবেন না।”
চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে এক মহিলাকে কামড়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ঘেউ ঘেউ করবেন না ডিএ দিতে পারব না। পুলিশ সেই কথা শুনে ওই ঘেউ ঘেউয়ের মতো কামড়াতে শিখে গেছে। ঘেউ ঘেউ করতে মানা। কিন্তু কামড়াতে তো মানা নেই, তাই সুযোগ পেলেই কামড়ে দিচ্ছে এখন। আর আপনারা হাসপাতালে গেলে ডাক্তারবাবুকে জিগ্যেস করবেন পুলিশ কামড়ালে কী ভ্যাকসিন নিতে হবে? আর তৃণমূল নেতাদের দেখলে জিজ্ঞেস করবেন, পুলিশ কামড়ালে যে ভ্যাক্সিন নিতে হয় সেই ভ্যাকসিন কি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে পাওয়া যাবে?