আমাদের ভারত, ২৫ জানুয়ারি:মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেসি ও তৃণমূলকে মেসির টিম উল্লেখ করে রাজ্য বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বকে আক্রমণ করেছেন দলের বিদ্রোহী নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার রীতেশ তেওয়ারিরা। তাদের দাবি বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বের তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করার কোনো শক্তি নেই। তার জবাবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মনে করিয়ে দিয়েছেন ১৭ বছরের কিশোর বয়সের শচীন তেন্ডুলকরের কথা। যিনি ওই বয়সেই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঝড় তুলেছিলেন। একই সঙ্গে বরখাস্ত করার পদ্ধতি নিয়ে যে প্রশ্ন দুই বিদ্রোহী নেতা তুলেছেন তার জবাব মিডিয়ার কাছেই জানার পরামর্শ দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার তাদের। কারণ তারা প্রশ্ন দলের বদলে মিডিয়ার আর কাছে তুলেছেন।
দল বিরোধের মন্তব্যের জন্য শোকজ করা হয়েছিল জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তেওয়ারিকে। তারপরের দিনই রাজ্য বিজেপি সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে উভয় নেতাকে। বলা হয় তদন্ত চলা পর্যন্ত তাদের বরখাস্ত করা হলো। এরপরই মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। সেখানে শুধু রাজ্য নেতৃত্ব নয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় বিদ্রোহী দুই নেতা।
বিধানসভা নির্বাচনে বাইরে থেকে নেতৃত্ব নিয়ে এসে লড়াই করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা। রাজ্য নেতৃত্বে কাচের ঘরে বসে অন্যদের ঢিল মারার নীতির অভিযোগ করে। বিদ্রোহী দুই নেতা বলেন বঙ্গ বিজেপির দায়িত্ব এখন যাদের কাঁধের তাদের প্রথম জন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, যে মাত্র আড়াই বছর রাজনীতি করছেন। আর দ্বিতীয় জন সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী যিনি দুবছর বাংলা রাজনীতি করছেন। অর্থাৎ বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ দুই নেতার সম্মিলিত রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা পাঁচ বছরেরও কম বলে তারা দাবি করেন। তাই তাদের কথায় পাঁচ বছরেরও কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নেতারা লড়াই করছে যার বিরুদ্ধে তিনি এই মুহূর্তে ভারতের অন্যতম স্ট্র্যাটেজিস্ট কুশলী নেত্রী। জয় প্রকাশের কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা পছন্দ নাও করলেও ভুলে গেলে চলবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আন্দোলনের অভিজ্ঞতা দীর্ঘকালের। মমতার মত দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসো অভিজ্ঞ নেত্রীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজেপির কিনা যৌথভাবে পাঁচ বছরেরও কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই দুই নেতা। আসলে মেসি টিমের বিরুদ্ধে তিনদিনের অনুশীলনে খেলতে নামা প্লেয়ার।
এই মন্তব্যের জবাবে সুকান্ত মজুমদার বলেন যারা, সাংবাদিক বৈঠক করেছেন তারা এখন আমাদের দলের কেউ নন। তবে আমি মনে করাতে চাই সেই ১৭ বছরের কিশোরের কথা। যিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে ঝড় উঠিয়ে ছিলেন। সুকান্ত বাবু বলেন জয়প্রকাশ মজুমদার অনেকদূর চলে গেছেন, দল বিরোধী কার্যকলাপের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমাদের আর কিছু বলার নেই। আত্মপক্ষ সমর্থন মিডিয়ার কাছে নয় দলের কাছে করতে হয়।
জয়প্রকাশ মজুমদার রীতেশ তেওয়ারি শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা ও বরখাস্ত করার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। কেন কিছু না জানিয়েই এভাবে তাদের শাস্তি হয়ে গেল? এই প্রসঙ্গে সুকান্তর মজুমদারের বক্তব্য, “উনি আমাদের কাছে কিছু জানতে চাননি। উনি মিডিয়ার কাছে জানতে চেয়েছেন। মিডিয়া উত্তর দেবে।”
বরখাস্ত হওয়া জয়প্রকাশ ও রীতেশের বিরুদ্ধে কোনো পাকাপাকি শাস্তির বিধান দেওয়া হবে কিনা প্রশ্ন করলে সুকান্ত মজুমদার জানিয়ে দেন, সেটা সময় হলে জানিয়ে দেওয়া হবে।