Modi, Sukanta, ভারত-ফিজি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অজিত ডোভালের সঙ্গে উপস্থিত সুকান্ত মজুমদার

আমাদের ভারত, ২৫ আগস্ট: ভারত ও ফিজির মধ্যে আজ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, দক্ষতা উন্নয়ন সহ একাধিক বিষয়ে সমঝোতা স্মারকপত্র মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে। নয়া দিল্লিতে হায়দারাবাদ হাউসে এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, অজিত ডোভাল, বিদেশ সহ একাধিক মন্ত্রকের সচিবরা। আন্তর্জাতিক স্তরের এই ধরনের বৈঠকে বাংলার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিত বঙ্গ রাজনীতির জন্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় বলে মনে করা হচ্ছে।

চারদিনের সফরে ভারতে এসেছেন ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিতিভেনি লিগামামাদা রাবুকা। তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছেন, সুকান্ত মজুমদার। এরপর আজ দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সুকান্ত মজুমদার, যা বঙ্গ রাজনীতির পর্যালোচনাকারীদের নজর এড়িয়ে যায়নি। আন্তর্জাতিক স্তরের এইধরনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয়, তিনি নরেন্দ্র মোদীর গুড-বুকে রয়েছেন। সর্বোপরি বাংলার কোনো নেতাকে বহুদিন পর এতোটা গুরুত্ব পেতে দেখা গেল।

বার বার কেন্দ্রীয় বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, বাঙলা তথা বাঙালিকে গুরুত্ব না দেওয়া নিয়ে। কিন্তু সেই আবহে দাঁড়িয়ে বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের এই ধরণের আন্তর্জাতিক স্তরের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উপস্থিত থাকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ভারত‌ সফরে আসা ফিজির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। আজ দু’দেশের নেতৃত্বের বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক উঠে আসে। প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, কৃষিজাত প্রক্রিয়াকরণ, বাণিজ্য বিনিয়োগ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, সমবায়, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব করার কথা বলেন তাঁরা। এছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয় মত বিনিময় হয়েছে উভয়ের মধ্যে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ।

জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করেছে ফিজি। মৌলবাদের প্রসার রোধ এবং জঙ্গিদের হাতে অর্থের সংস্থান বন্ধ করা এই সময় দাবি বলেই মনে করেছে উভয় দেশ। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দায়বদ্ধতার কথা নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুই দেশের নেতার মধ্যে। পরিবেশবান্ধব জৈব জ্বালানি উৎপাদনের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক আদান-প্রদান বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে বলে ভারত ও ফিজি দু’জনেই মনে করেছে। ফিজি সরকার নিজের দেশে ভারতের ‘ঘি’কে বিপণনের অনুমতি দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহ প্রকল্পের ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে যৌথ প্রকল্পের কথা উঠে এসেছে। জেনেরিক ওষুধ সহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও ডিজিটাল স্বাস্থ্যপরিসেবা প্রসারে ভারত ফিজিকে সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। প্রতিরক্ষা খাতেও দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ায় সম্প্রতি গতি এসেছে। ফিজিতে হিন্দি চর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় হিন্দি ও সংস্কৃত শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে কথা হয়েছে। কথা হয়েছে, ভারতে আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবের প্রসঙ্গ নিয়েও। ভারত ফিজিকে বারোটি কৃষি ড্রোন এবং দুটি ভ্রাম্যমান মৃত্তিকা পরীক্ষণ কেন্দ্র দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। ফিজির সুগার কর্পোরেশনের কর্মীদের প্রশিক্ষিত করতে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ দল সেখানে যাবেন বলে জানিয়েছে ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *