Sukanta, Mamata, পুলিশকে ডোন্ট কেয়ার হবার বার্তা, প্রতিবাদীদের সম্পর্কে কুমন্তব্য, মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে, পদত্যাগ দাবি সুকান্তর

আমাদের ভারত, ৭ অক্টোবর: এর আগে একবার দলের সভা মঞ্চ থেকে কর্মীদের ফোঁস করতে বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার শব্দ বদল করে পুলিশকেও একই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই বার্তা দিতে গিয়েই একদিকে পুলিশকে ডোন্ট কেয়ার হবার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা অনেকেই যখন পুলিশের ভুমিকার সমালোচনা করেছেন তাদের সম্পর্কে আপত্তিকর উক্তি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে অভিযোগ করেছেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির রাজ্যসভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বলেছেন, জনগণের কাছে ইস্তফা পত্র জমা দিন।

পুলিশকে মুখ্যমন্ত্রী একদিকে রাফ অ্যান্ড টাফ হবার পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে একটি হিন্দি প্রবাদ বলেছেন, যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, “রাজা বাজার গেলে হাজার কুকুর ঘেউ ঘেউ করে (রাজা চলে বাজার, তো কুত্তা ভৌকে হাজার)। এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে যা খুশি বলুক পুলিশকে ডোন্ট কেয়ার থাকতে হবে। শক্তহাতে কাজ করতে হবে বলেও পুলিশকে বার্তা দিয়েছেন তিনি।

এই বক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লিখেছেন, “আপনার সর্বগ্রাসী প্রাতিষ্ঠানিক লুঠ এবং মিথ্যাচারের রাজনীতির বিরুদ্ধে সামান্য প্রতিবাদ করলেই তিনি ‘কুত্তা’? আর আপনার তল্পিবাহক দলদাস অপদার্থ পুলিশ প্রশাসন ‘মহান’?”

একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফাপত্র দাবি করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, “আপনার তোষণের রাজনীতি আর প্রশাসনিক অপদার্থতার কারণে রাজ্যের সর্বত্র মহিলাদের উপর নারকীয়, পৈশাচিক নির্যাতন ঘটলেও কেউ প্রতিবাদ করতে পারবে না! জনগণের মুখবন্ধ রেখে, ধমকে-চমকে আর কত দিন এভাবে পুলিশ ব্যবহার করে আসনরক্ষা করবেন মাননীয়া?”

আর জি কর, জয়নগর, নিউটাউন, পটাশপুর- এর মতো একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে রাজ্য। এর আগেও কামদুনি পার্ক স্ট্রিটের মতো ঘটনা ঘটেছে। সেই সময় অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতিতার দিকেও আঙ্গুল তুলেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান, সেই কথা উল্লেখ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি লিখেছেন, “রাজ্যের মহিলাদের প্রতি ন্যূনতম সম্মান দিতে আপনি অপারগ। অতীতেও মহিলাদের উপর নির্যাতন কিংবা ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে নির্যাতিতার সম্পর্কে আপনি যে সমস্ত শব্দ প্রয়োগ করেছেন, তা সেই নির্যাতিতাদের জন্য প্রত্যক্ষ হেনস্থার সামিল।”

কিন্তু দিনের পর দিন এই ঘটনা সহ্য করতে না পেরে আম জনতা রাস্তায় নেমেছে। তখন পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নানা ভাবে প্রতিবাদীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সেই প্রতিবাদীদের সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিতর্কিত মন্তব্যকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, “রাজ্যের জনগণ যখন আপনার দলদাস প্রশাসনের আতঙ্ক উপেক্ষা করে পথে নামছেন তখন তাঁদের সম্পর্কে এই মন্তব্য রাজ্যের মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে।”

প্রতি মুহূর্তে লাঞ্ছিত হয়ে, বিচার না পেয়ে বাংলার মানুষ এখন আপনার স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছেন। অনুগ্রহ করে বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে এমন চূড়ান্ত অবমাননাকর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।”

একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন। “সাহস থাকলে নিজেকে একজন ব্যর্থ প্রশাসক হিসেবে ঘোষণা করে এবং আপনার ব্যর্থতার দায় নিয়ে জনগণের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র দান করুন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *