আমাদের ভারত, ২৬ অক্টোবর: দানাপানি না জোটায় মাথায় হাত পড়েছে তৃণমূল নেতাদের। ডানা মোকাবিলায় তৃণমূল নেত্রী তথা দলের নেতাদের ভূমিকা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এভাবেই কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
শনিবার মালদার কালিয়াচকের চাম গ্রামে একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বঙ্গ বিজেপি সেনাপতি। মুখ্যমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড় ডানা আসার দিন সারা রাত নবান্নে ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই নবান্নে থাকাকে তৃণমূল রাত দখল বলে প্রচারে নামতে চলেছে বলে খবর। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে শুয়ে থাকলেন, না নিজের বাড়িতে শুয়ে থাকলেন তাতে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কিই বা যায় আসে? পশ্চিমবঙ্গবাসী তাকে দায়িত্ব দিয়েছে তাদের রক্ষা করার জন্য। তিনি কটাক্ষ করে আরো বলেন, তৃণমূলের নেতাদের মাথায় হাত পড়ে গেছে, ডানা এদিকে না এসে ওড়িশায় এলো বলে। কারণ ডানা যদি পশ্চিমবঙ্গে আসত তাহলেই তো তৃণমূলের দানাপানি হত। ডানা না আসায় তৃণমূল নেতাদের দানাপানি বন্ধ হয়ে গেছে। আয়লা, আমফানের মতো ঘূর্ণিঝড়ের পর ত্রাণ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ডানা ঘূর্ণিঝড় আসার আগেও বিজেপি বার বার এই বিষয়ে সরব হয়েছে। আজ আবারো সেই প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের নেতা- কর্মীদের কটাক্ষ করেছেন সুকান্ত মজুমদার।
এদিকে আর জি কর কান্ডের বিচার চেয়ে গণ কনভেনশন করার জন্য অডিটরিয়াম ব্যবহারের অনুমতি দিয়েও বাতিল করে কল্যাণী জেএনএম কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, থ্রেট কালচার শুধু মেডিকেল কলেজগুলোতে আছে তা নয়, গোটা পশ্চিমবঙ্গজুড়ে থ্রেট কালচার চলছে। কনভেনশন বন্ধ করানো হয়েছে। মানুষের কন্ঠ রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কতদিন এভাবে মানুষের কন্ঠ রোধ করতে পারবে?
এদিকে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়ার ডক্টরর্স ফোরামের বিরুদ্ধে পাল্টা সংগঠন তৈরি হচ্ছে। জুনিয়র ডাক্তাররা বলছেন এটাও একটা থ্রেট কালচার। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস এই আন্দোলনকে ধ্বংস করতে সব রকম ভাবে চেষ্টা চালিয়েছে। আরো নতুন নতুন চেষ্টা করবে। রাজ্যে পুলিশ থেকে শুরু করে মেডিকেল কলেজ, শ্মশান পর্যন্ত থ্রেট কালচার চলছে। তাঁর অভিযোগ, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এই রাজ্যে থ্রেট কালচারের জন্মদাত্রী।
এদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে আবার শিশু বদলের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা শুনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “যেখানে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে সেখানে শিশু বদল কেনো, আরো অনেক কিছুই ঘটবে। কুকুর বেড়ালের ডায়ালিসিস থেকে শুরু করে শিশু বদলের মত কোনো কিছুতেই পশ্চিমবঙ্গ রেকর্ড করতে ছাড়ছে না। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ওনাকে অভিনন্দন। এই এত ভালো ভালো রেকর্ড তৈরি করার জন্য।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানান, ২৭ অক্টোবর থেকে রাজ্যজুড়ে বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণ অভিযান শুরু হবে। গোটা দেশে সদস্যপদ গ্রহণ অভিযান শুরু হয়েছে এবং তাতে চার পাঁচটা রাজ্যে এখন সদস্যপদ গ্রহণ অভিযান শুরু না করা সত্ত্বেও ইতিমধ্যেই বিজেপির সদস্যপদ ১০ কোটি ছাড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে দলের কর্মীরা আন্দোলনের মধ্যে থাকার কারণে এই কাজ আগে শুরু হয়নি। আগামীকাল অমিত শাহ আসছেন রাজ্যে। তার উপস্থিতিতেই দলের সদস্যপদ গ্রহণ অভিযান শুরু হবে পশ্চিমবঙ্গে।