আমাদের ভারত, ১৯ ডিসেম্বর: সব জল্পনার ইতি টেনে ২১ বছরের সম্পর্ক শেষ করে আজ মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় নিজের অনুগামীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন মঞ্চেই তিনি প্রণাম করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। আর বিজেপিতে যোগ দিয়েই একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলে মঞ্চ থেকে ডাক দিলেন, “তোলাবাজ ভাইপো হটাও।”
তিনি বলেছেন তৃণমূলের হয়ে বলেছিলাম বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও। আজ মেদিনীপুরের সভায় বলছি তোলাবাজ ভাইপো হটাও। শুভেন্দু বলেন, ‘অমিত শাহ আমার বড় দাদা। আমি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলাম। সেই সময় ২১ বছর যে অকৃতদার দলের জন্য কাজ করেছি তারা কেউ আমার খোঁজ নেননি। অমিত শাহ দুবার খোঁজ নিয়েছেন।’ তিনি বলেন, “আমাকে মায়ের বিশ্বাসঘাতক বলছে। আমি বলব আমার মা গায়েত্রী অধিকারী, আমার মা ভারতমাতা, অন্য কেউ না।” তৃণমূল নেত্রীর উদ্দেশে তারা বার্তা, ‘এবার দ্বিতীয় হবে তৃণমূল।’
তিনি বলেন, তাকে বলা হচ্ছে পদের লোভে শুভেন্দু বিজেপিতে গেছেন। তার দাবি তিনি পদের লোভে নন, একজন কর্মী হিসেবে বিজেপিতে যোগ দিলেন। পাড়ায় পাড়ায় বুথে বুথে কাজ করবেন তিনি, মাতব্বরি করতে তিনি আসেননি, কর্মী হিসেবে কাজ করবেন, পতাকা লাগানো হোক বা দেওয়ালন লিখন সব কিছু করবেন তিনি বিজেপি কর্মী হয়ে। ছাত্র রাজনীতি করে এক এক করে সিড়ি বেয়ে তিনি উপরে উঠেছেন। ফলে যেখানে আস্থা, সম্মান, বিশ্বাস নেই সেখানে থাকবো না।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ১০ বছরে রাজ্যে কোনো কাজ হয়নি। শুভেন্দু বলেন রাজ্যে দুর্নীতির চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ফলে রাজ্যের উন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সরকার প্রয়োজন। রাজ্য করোনা কালে তৃণমূলের গাফিলতির কারণে কেন্দ্রীয় সহায্য পায়নি রাজ্য। আজ বিজেপি নেতৃত্বের মতো তার মুখেও শোনা গেল কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্যে লাগু না করার অভিযোগ।
বহিরাগত প্রসঙ্গেও তোপ দেগে তিনি বলেন, অমিত শাহকে বহিরাগত বলা হয়েছে, আমি বলছি আমরা আগে ভারতীয় তারপর বাঙালি। আর বক্তব্যের সবশেষে তার সবচেয়ে বেশি ঝাঁঝালো মন্তব্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দ্যেশ্যে ছিল তোলাবাজ ভাইপো হটাও। তিনি বলেন, তৃণমূলের এক কর্মী তাকে ভিডিও পাঠিয়ে মনে করান একসময় তিনি বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও বলতেন। তার উত্তরে তিনি তাকে বলেছেন,” তখন আমি মন দিয়ে তৃণমূল করতাম। কাল থেকে আমি বলব তোলাবাজ ভাইপো হটাও।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে শুভেন্দুর এই মন্তব্যই আবারও স্পষ্ট করে দিল তার দলত্যাগের কারণ।