Student, Supreme Court, হু হু করে বাড়ছে পড়ুয়াদের আ*ত্মহ*ত্যার ঘটনা! প্রবণতা ঠেকাতে ১৫ দফা গাইডলাইন জারি সুপ্রিম কোর্টের

আমাদের ভারত, ২৬ জুলাই: ভারতজুড়ে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানগুলিতে আত্মহত্যার সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত দেশের শীর্ষ আদালত। এই অবস্থায় পড়ুয়াদের আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে ১৫টি জরুরি নির্দেশিকা বা গাইডলাইন আনলো সুপ্রিম কোর্ট। এই নির্দেশিকা মানতে হবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং সেন্টার, প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি এবং হোস্টেলগুলিকে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিপুল সিলেবাস ও পরীক্ষার চাপ সামলাতে না পেরে আত্মহত্যা করছে শিক্ষার্থীরা। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। আদালতের আরো পর্যবেক্ষণ, পড়ুয়াদের ওপর বোঝা চাপানো শিক্ষা ব্যবস্থার কাজ নয়, বরং এর থেকে মুক্তি দেওয়াই শিক্ষা ব্যবস্থার কাজ। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ব্যবস্থা প্রায় সেই পড়ুয়াদের মানসিক চাপের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে বলেও মনে করছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। আর সেই কারণে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের এই গাইডলাইন।

কী কী রয়েছে এই গাইডলাইনে? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ী এবার থেকে ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্যের কাউন্সেলিং বাধ্যতামূলক। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সক্রিয় রাখতে হবে অভিযোগ গ্রহণ ও তার প্রতিকারের ব্যবস্থা। ছাত্রদের ছোট ব্যাচগুলিতেও একজন করে পরামর্শদাতা মেন্টর বা কাউন্সিলর রাখতে হবে। বিশেষ করে পরীক্ষার সময় এবং প্রতিষ্ঠানে নতুন আসার পরে পড়ুয়াদের এই সাহায্য করা হবে।

শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, দেশে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে, আসলে পদ্ধতিগত ব্যর্থতা যা উপেক্ষা করা যায় না। বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি পড়ুয়া রয়েছে, সেখানে কমপক্ষে একজন মনোবিদ বা কাউন্সিলর অথবা সমাজকর্মী নিয়োগ করতে হবে। এছাড়াও আত্মহত্যা প্রতিরোধে হেল্পলাইন নম্বর ক্যাম্পাস, হোস্টেল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটগুলিতে আপলোড করতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সহ সমস্ত কর্মীদের বছরে কমপক্ষে দু’বার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। আত্মহত্যার সম্ভাবনা কমাতে আবাসিক হোস্টেলগুলিকে অবশ্যই টেম্পার প্রুফ সিলিং ফ্যান ইন্সটল করতে হবে। ছাদ বারান্দায় প্রবেশাধিকার সীমিত করতে হবে।

পড়ুয়াদের আত্মহত্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার নেপথ্যে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বিশাখাপত্তনমে এক নিট পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার মামলা ছিল। মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি চলাকালীন ১৭ বছর বয়সী ওই পড়ুয়া আত্মহত্যা করে। আদালত পড়ুয়ার বাবার আবেদনের ভিত্তিতে এই মামলার তদন্ত সিবিআই’কে দেয়। আদালত মন্তব্য করে, ভারতের তরুণদের মধ্যে হতাশা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামোগত অস্থিরতার ইঙ্গিত দেয়।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের নেপথ্যে জাতীয় অপরাধ রেকর্ড বিওরোর পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে ভারতে ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৯২৪টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৭.৬ শতাংশ অর্থাৎ ১৩ হাজার ৪৪ জন পড়ুয়া। এর মধ্যে ২২০০ জনের বেশি পড়ুয়া পরীক্ষায় ব্যর্থতার কারণে আত্মহত্যা করেছে। এই পরিস্থিতি ২ বিচারপতি জানিয়েছেন, আদালতের এই নির্দেশাবলি আনুষ্ঠানিক আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের আইন হিসেবে গণ্য হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *