সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১৯ ফেব্রুয়ারি: সদ্যোজাত সন্তানকে এক পলক দেখা। তার পরে ফের পরীক্ষার উত্তরপত্রে মন দিল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই ইংরেজি পরীক্ষা দিতে দিতে ওই ছাত্রী নাজমা মণ্ডল বলেন, “সন্তানের মতোই পড়াশোনার উপরেও ভালবাসা রয়েছে। সন্তানকে পাশে নিয়েই পরীক্ষা দিয়েছি। বাকিগুলিও দিতে চাই।”
উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁ থানার ঘাটবাওর রামচন্দ্রপুর হাইস্কুলের ছাত্রী। টানাটানির সংসারে বছর দেড়েক আগে বিয়ে হয় তার। কিন্তু পড়াশোনা ছাড়তে পারেনি। স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন আপত্তি করেননি। পরিযায়ী শ্রমিক স্বামী কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে। তার মধ্যেই পড়াশোনা চালিয়ে পরীক্ষায় বসা। নাজমা হাসপাতালের বেডে শুয়ে জানায়, প্রথম পরীক্ষা এই অসুস্থ অবস্থাতেও ভালো দিয়েছি। রবিবার সকালে প্রসব-বেদনা ওঠে। এরপর বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। ওই দিনই চিকিৎসকরা তাঁর অপারেশন করেন। সেখানেই জন্ম দেয় এক পুত্র সন্তানের। সেই ধকল শরীরে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খাতা-কলম নিয়ে পরীক্ষা দিতে বসা। সোমবার সকালে একটু সুস্থ হলেই নাজমা পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতেই হাসপাতালে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করলো স্কুল ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসক মহিতোষ মণ্ডল বলেন, প্রসবের বেদনা নিয়ে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ওই ছাত্রী। প্রথমে নর্মাল ডেলিভারি করার সব রকম চেষ্টা করা হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিজার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিজারের টেবিলেই নাজমা পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এরপর হাসপাতাল সুপারের সহযোগিতায় তাঁকে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।