আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, সিউড়ি, ১৮ ডিসেম্বর: চুক্তির ধারা লঙ্ঘনের কারণে দেওচা- পাঁচামি কয়লাখনিতে পাথর তোলার কাজের দরপত্র বাতিল করল রাজ্য সরকার। মেসার্স পাঁচামি ব্যাসল্ট মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড- এর প্রথম পর্যায়ে ১২ একর জমিতে প্রথম ধাপের পাথর তোলার কাজ বন্ধ করল রাজ্য সরকার। দ্বিতীয় ধাপে ৩১৪ একর জায়গার উপর পাথর তোলার জন্য নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
এনিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, দেওচা- পাঁচামিতে কয়লাখনি কোনদিন বাস্তবে রূপ পাবে না। শুধুমাত্র বাংলার মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার সিউড়ি দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই অভিযোগ করেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, দেওচা- পাঁচামিতে দেশের বৃহত্তম কয়লাখনি গড়ে উঠবে বলে বছরখানেক আগে বিশ্ব শিল্প বাণিজ্য মেলায় ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো আদিবাসীদের বাধা উপেক্ষা করে পুলিশ দিয়ে খনন কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু মেসার্স পাঁচামি ব্যাসল্ট মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড চুক্তি লঙ্ঘন করায় তাদের বরাত বাতিল করেছে রাজ্য সরকার।
এনিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকার ১৫ বছরে একটা মুড়ি মিলের উদ্বোধন করেনি এখনও। অথচ রাজ্যের মানুষকে কয়লা খনির মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে যাচ্ছেন। আবারও একটা বিশ্ব সম্মেলনের আগে তারা পাথর উত্তোলন সংস্থার বরাত বাতিল করে নতুন করে বিশ্বের দরবারে পাথর তোলার দরপত্র আবেদন করেছে। সেই সঙ্গে আগের সংস্থাকে উত্তোলন করা পাথর ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডবলুবিপিডিসিএলের পক্ষ থেকে। এমনকি নতুন করে ৩১৪ একরের যে দরপত্র দেওয়া হয়েছে সেখানে পাথর উত্তোলনের কথা বলা হয়েছে। কোথাও কয়লাখনির উল্লেখ নেই। এই পাথর তোলার দরপত্র দেওয়া হচ্ছে ১৫ বছরের জন্য। ফলে ১৫ বছর শুধু পাথরই উঠবে।
সরকার স্বীকার করছে কয়লা নয়। ফলে আপাতত দরপত্র ডাকা হয়েছে বিশ্ব থেকে। অক্টোবরে দরপত্র ডাকা হলেও, এখনও পর্যন্ত কোনো দরপত্র জমা দিতে বিশ্বের কোনো সংস্থার কেউ আগ্রহ দেখায়নি। কারণ এখানে প্রাতিষ্ঠানিক তোলাবাজি চলছে। এমনকি ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দরপত্র আহ্বানের সময় বাড়ানো হলেও এখনও কেউ আগ্রহ প্রকাশ করেনি। এটাই রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতি। কয়লাখনির কোনো নকশা তৈরি হয়নি। কেন্দ্রের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু সেখানে কোনো পরিকল্পনা জমা পরেনি। শুধু আদিবাসীদের বঞ্চিত করে তাদের জায়গা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর চাকরি পেয়েছেন শাসক দলের ছেলে- মেয়েরা। আমরা সরকারের এই ভাঁওতাবাজির তীব্র প্রতিবাদ জানাই”

