আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১২ সেপ্টেম্বর: পাথর খাদানে ধসে মৃত্যু হলো ছয় শ্রমিকের। আহত আরো চারজন। তাদের বীরভূমের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ এবং বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূম জেলার নলহাটি থানা এলাকার বাহাদুরপুর গ্রামের পাথর শিল্পাঞ্চলে। মৃতরা হলেন রথীন দফাদার, লালবাবু সেখ, সামিউল মোল্লা, হযরত আলী, রথু মণ্ডল, জিয়াউল শেখ। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে পাথর ফাটানোর জন্য ড্রিল মেশিন দিয়ে পাথরের দেওয়ালে গর্ত করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। সেই গর্তে বিস্ফোরক ভরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর ফাটানো হয়। যেখানে ড্রিল করা হচ্ছিল তার নিচেই কাজ করছিলেন আরো কিছু শ্রমিক। পাথরে ড্রিল করার সময়ই পাথরে ধস নামে। সেই পাথরে আঘাত লেগে জখম হন দশজন শ্রমিক। তাদের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, অধিকাংশ পাথর খাদান অবৈধ। যে সমস্ত শ্রমিক কাজ করে তাদেরও নির্দিষ্ট পোশাক দেওয়া হয় না। রাস্তার দু’ধারে মরণ ফাঁদের মতো খাদানগুলি দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রায় সেখানে পথ চলতি মানুষ পড়ে গিয়ে মারা যান। কিন্তু ভ্রূক্ষেপ নেই কারো। মৃত্যুর পরেই শাসক দলের নেতারা মৃতদেহ কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মৃত শ্রমিকের পরিবারও টাকা নিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখেন, ফলে পাথর শিল্পাঞ্চলে দুর্ঘটনা জলভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সঞ্জীব মল্লিক বলেন, “এই দুর্ঘটনার জন্য প্রশাসন এবং শাসক দল দায়ী। কারণ তাদের মদতেই দিনের পর দিন অবৈধ পাথর খাদান রমরমিয়ে চলছে। মাঝে খাদান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা শাসক। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। ফলে ছয়টি প্রাণ অকালে চলে গেল।”
এলাকার বিধায়ক রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং বলেন, “খবর পেয়ে হাসপাতালে এলাম। তবে কিভাবে হয়েছে বলতে পারব না।”
মৃতের আত্মীয় কল্যাণ মণ্ডল বলেন, “সব অবৈধ খাদান। পুলিশ প্রশাসনের মদতে অবৈধ খাদানে চলছে। অবিলম্বে অবৈধ খাদান বন্ধ করতে হবে।”