STF, ধর্ম প্রচারের আড়ালে পাক গুপ্তচর বৃত্তি, এসটিএফের জালে ধরা পড়ল ২ সন্দেহভাজন

আমাদের ভারত, ৯ জুলাই: স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে ঘুরে ঘুরে ধর্ম প্রচার ও ধর্মান্তকরণের কাজ করত, আর এই কাজের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চালাচ্ছিল পাক গুপ্তচর বৃত্তি। ভারতীয় সিম কার্ড জোগাড় করে পাক এজেন্টদের তুলে দিয়েছিল। পাশাপাশি সিম কার্ডের মাধ্যমে ওটিপি পাঠানোর মাধ্যমে তথ্য পাচার করতো। ঘটনায় এসটিএফের জালে ধরা পড়েছে ২ সন্দেহভাজন ব্যক্তি।

অপারেশন সিঁদুর চলার সময় থেকে চলছিল গুপ্তচর বৃত্তি। সেই সময় থেকেই রাজ্যের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ- এর নজরে ছিল পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ের ক্যানালপাড়ের এক বাসিন্দা। এছাড়াও তার এক সঙ্গীর কথাও জানতে পেরেছে এসটিএফ।

শনিবার গভীর রাত তথা রবিবার খুব ভোরে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ও বর্ধমান শহরে অভিযান চালিয়ে দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে এসটিএফ। ধৃতরা হলো মুকেশ রজক ও রাকেশ কুমার গুপ্তা। সোমবার তাদের কলকাতা আদালতে পেশ করে সাত দিনের হেফাজতে নিয়েছে এসটিএফ। এরা ছাড়া এই কাজে আরও কয়েকজন রয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। তাদের সন্ধান করছে এসটিএফ।

মুকেশ রজকের বাড়ি পানাগড়ে। তার কাছেই রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ঘাঁটি। অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন মুকেশের গতিবিধির উপর নজরদারি শুরু করে এসটিএফ। সেই সূত্রে কলকাতার ভবানীপুরের প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের বাসিন্দা মুকেশের কথা জানতে পারে। তারা দু’জনেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ধর্ম প্রচার ও ধর্মান্তকরণের কাজ করতো। আর এর আড়ালে চালাচ্ছিল গুপ্তচর বৃত্তি।

মাস ছয়েক আগে তারা মেমারি পৌরসভা এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। শনিবার রাতে সেখানেই হানা দেয় এসটিএফ। রাকেশ ধরা পড়ে। মুকেশ সেখানে ছিল না। রাকেশকে নিয়ে ঐদিন রাতেই বর্ধমানের নবাবহাট এলাকায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে হানা দিয়ে মুকেশকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। অসুস্থতার কারণে সেখানে ভর্তি ছিল মুকেশ। দু’জনকে ওই দিন ভোরে কলকাতায় নিয়ে যায় এসটিএফ।

ধৃতদের দাবি, তারা আইএসআই’য়ের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে মোবাইলের সিম কার্ডের তথ্য ওটিপির মাধ্যমে দিল্লি ও মুম্বাইয়ের কয়েকজনকে পাঠাতো তারা। সেই লোকেরা আইএসআইয়ের সঙ্গে যুক্ত কিনা সেটা তারা জানে না। যা একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছে না
তদন্তকারীরা। তথ্যের বিনিময়ে মোটা টাকা পেত তারা। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা লেনদেনের খবর মিলেছে। এসটিএফ সবকিছু খতিয়ে দেখছে। কত দিন ধরে ধৃতরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাও জানার চেষ্টা চলছে।

গত বছরের গোড়ায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় ডেরা বেঁধেছে এরা। ধৃতদের মোবাইল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাকাউন্টের নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে এই বিষয়টির সঙ্গে আর কারা জড়িত তাদের সন্ধান পেতে চাইছে তদন্তকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *