আমাদের ভারত, ১২ ডিসেম্বর: মন্দির- মসজিদ সহ উপাসনালয়গুলিতে যে সমীক্ষা চলছে তাতে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মন্দির বা মসজিদ নিয়ে এখন নতুন করে কোনো মামলা করা যাবে না। ধর্মীয় স্থান সংক্রান্ত এতদিন পর্যন্ত যে মামলাগুলি রয়েছে সেগুলির আগে নিষ্পত্তি হবে, তারপরে নতুন মামলা গৃহীত হবে আদালতে। নিম্ন আদালতগুলিতেও এই সংক্রান্ত মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ কোনো নির্দেশ দিতে নিষেধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
চার বছর আগে দায়ের হওয়া উপাসনাস্থল আইন সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই বিষয়ে মতামত দিয়ে রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে কেন্দ্র সরকারের কাছে।
১৯৯১ সালে উপাসনাস্থল আইন বদলের একাধিক মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। তিন বছর থেকে সেগুলির কোনো শুনানি হয়নি। বৃহস্পতিবার ছিল সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানির দিন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার, বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে মামলাটি উঠেছিল। আদালত জানিয়েছে, এই মুহূর্তে দেশে মন্দির, মসজিদ, অন্য উপাসনা স্থল নিয়ে যত মামলা চলছে, যত সমীক্ষা চলছে তা আপাতত স্থগিত থাকবে। নিম্ন আদালত, এমনকি হাইকোর্টগুলিকেও এই সংক্রান্ত মামলায় আপাতত কোনো তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ দিতে নিষেধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
উপাসনাস্থল আইন সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালতগুলি এই সংক্রান্ত কোনো নতুন মামলা শুনতে পারবে না বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
মুলতবি মামলায় অন্তর্ভুক্তি বা চূড়ান্ত আদেশ জারি না করার জন্য নিম্ন আদালতের নির্দেশের মধ্যে রয়েছে জ্ঞানব্যাপী মসজিদ, মথুরার শাহি ইদগাহ, সম্ভল মসজিদ সংক্রান্ত মামলা।এই প্রতিটি মামলায় হিন্দু পিটিশনকারীদের দাবি যে, হিন্দু মন্দিরের ওপরে মসজিদগুলো নির্মিত হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দাখিল না করা পর্যন্ত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
২০২১ সালের ১২ মার্চ উপাসনার স্থল আইন সংক্রান্ত আইনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের অবস্থান জানানোর জন্য একাধিকবার আদালতের কাছে সময় চেয়েছিল। সেই কারণে বারবার শুনানি পিছিয়ে যায়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি কেন্দ্র। এবারেও সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়টিকে কেন্দ্রকে তাদের অবস্থান রিপোর্ট আকারে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে।
১৯৯১ সালে উপাসনাস্থলে আইন অনুযায়ী কোনো মন্দির, মসজিদ ও গির্জার চরিত্র পাল্টানো যাবে না। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার সময় যেখানে যা ছিল তাই রাখতে হবে। কিন্তু এই আইনের বদল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর আপাতত তাতে স্থগিতাদেশ পড়ে গেল।