আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১৮ আগস্ট:
করোনা সংক্রমণ হয়েছে। তবে উপসর্গ নেই। কোনও রকম শারিরীক সমস্যা নেই। এমন রোগীদের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় সেফ হাউস খুলে যাচ্ছে ফালাকাটায়। জলদাপাড়া জঙ্গল লাগোয়া একসময়ের স্টার রিসর্টকেই গত একমাসে সেফ হাউসে বদলে দেওয়া হয়েছে। সানসিটি নামের রিসর্টটিতে থাকলে মনোরম জঙ্গলের পরিবেশে করোনা রোগীদের যাতে সামান্য সমস্যাও না হয় সব দিকই খেয়াল রেখেছে প্রশাসন। ফালাকাটার বিডিও সুপ্রতীক মজুমদার জানান,”প্রায় ৩ বছর রিসর্ট বন্ধ ছিল। আমরা সেটাকেই গত একমাস টানা কাজ করে সেফ হাউসে রুপান্তরিত করছি। জল বিদ্যুতের সংযোগ তৈরি করা হয়েছে। বসেছে জেনারেটর।দুটি এলইডি টিভি জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া হয়েছে। থাকছে ওয়াই-ফাই।আমরা খুব ছোট আকারে বিভিন্ন বই, ম্যাগাজিন রাখা যায় কিনা সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছি। দমকল বিভাগ নিরাপত্তার যে বিষয়গুলি জানিয়েছে তা নিয়ে শেষ মুহুর্তের কাজ চলছে।”
উল্লেখ্য, ফালাকাটায় এদিন পর্যন্ত কোনও সেফ হাউস নেই। তবে সানসিটি খুলে গেলে সেখানে প্রায় ৮৫ জন রোগীকে একসাথে রাখা যাবে। প্রায় ২১ বিঘা জমির উপর তৈরি স্থানটিকে সাজাতে ১০০দিনের পৃথক দুটি প্রকল্প চলেছে। তাতে কোভিড পরিস্থিতিতে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা গিয়েছে বিগত একমাসে। এও জানা গেছে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সাপের আড্ডা ছিল। ফালাকাটার বেশ কিছু সাপ ধরতে ওস্তাদ লোকেদের আনা হয়। বেশ কিছু ময়াল সাপ, বিষধর সাপ উদ্ধার হয়। এছাড়াও বনবিড়াল পাওয়া গেছিল।প্রাণীগুলিকে উদ্ধার করে দ্রুত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অনেকেই জানিয়েছেন, সানসিটিতে গেলে অনেকেই বাড়ি ফিরতে চাইবে না। রোগ থাকলেও রোগী সুস্থ হয়ে যায় এমন মনোরম পরিবেশে।এদিকে, শুধু সানসিটি নয়, মাদারিহাট ব্লকে দুটি, কালচিনি ব্লকের জয়গাঁতে দুটি, আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকে একটি মোট ৫ টি সেফ হাউস ইতিমধ্যেই সক্রিয় জেলায়। প্রতিটিতেই টিভি, ওয়াইফাই বসাবার কাজ শুরু হয়েছে।
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, কুমারগ্রাম ব্লকে একটি, আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকে একটি সেফ হাউস খুব দ্রুত সক্রিয় হবে। জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা বলেন, সেফ হাউসে যারা থাকবেন তারা যেন বাড়ির পরিবেশে থাকতে পারেন সেইভাবেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাজানো হয়েছে সবকিছু।
উল্লেখ্য, প্রায় উপসর্গ নেই কিন্তু কোভিড পজিটিভ, যাদের বাড়িতে পৃথকভাবে থাকা সম্ভবপর নয়, তাদের জন্য সেফ হাউস তৈরি করা হয়েছে।