আমাদের ভারত, ২১ আগস্ট: “পুরাতনই ভিত্তি নতুনই ভবিষ্যৎ”। তৃণমূল সম্পর্কিত এই নতুন হোর্ডিং নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। দিন কয়েক আগেই যেমন জল্পনা তৈরি হয়েছিল আরও একটি হোর্ডিং নিয়ে, তাতে লেখা ছিল আগামী ছয় মাসের মধ্যে সামনে আসবে নতুন তৃণমূল। দক্ষিণের পর এবার উত্তর কলকাতার ব্যানারও সরাসরি তৃণমূলের তরফে দেওয়া হয়নি। তবে এটাও তৃণমূলের প্রসঙ্গেই। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি বিরোধীদের দাবি করা আদি নব্য দ্বন্দ্ব নয়া তৃণমূলের এই হোর্ডিংয়ের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ্যে আসছে?
দক্ষিণের হোর্ডিংয়ে ছবি ছিল শুধুই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু উপরের ছবিতে অভিষেকের পাশাপাশি রয়েছে দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। মনে করা হচ্ছে দক্ষিণের হোর্ডিংয়ে ছিল নতুন তৃণমূল গড়ার ডাক আর উত্তরে রয়েছে নতুন ও পুরাতনের সমন্বয়ের ডাক। একটা সময় ছিল, দক্ষিণ কলকাতার দল হিসেবে পরিচিত ছিল তৃণমূল। কারণ মুখ্যমন্ত্রী থেকে মেয়র সকলেই ছিলেন দক্ষিণের বিধায়ক। এমনকি দলের প্রথম সারির নেতারাও ছিলেন মূলত দক্ষিণের। তৃণমূলের মধ্যে এমন একটা কথাও চালু ছিল যে উত্তরে নেতা হয়ে দলে বেশি উঁচুতে ওঠা যায় না। এই শনিবার রাত থেকে কলকাতায় যে হোর্ডিং দেখা যাচ্ছে তাকে দক্ষিণকে উত্তরের জবাব বলেও অনেকে মনে করছেন।
গত সোমবার স্বাধীনতা দিবসের দিন নজরে আসে দক্ষিণ কলকাতার হোর্ডিং। উত্তরবঙ্গের একটি সভা ও ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে অভিষেক বলেছিলেন আগামী ৬ মাসের মধ্যে আসছে নতুন তৃণমূল। তারপরই অভিষেকের ছবি সহ বড় বড় হোর্ডিং দেখা গেল দক্ষিণ কলকাতাজুড়ে। প্রচারে দুটি সামাজিক সংগঠনের নাম ছিল হোর্ডিং, যার সভাপতি কালীঘাটের এক তৃণমূল নেতা কুমার সাহা। সেদিন থেকেই এই হোর্ডিংয়ের পেছনে উদ্দ্যশ্য কি তা রাজ্য রাজনীতিতে বিশেষ চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে।
তৃণমূল বিষয়টিকে অর্থহীন বলে উড়িয়ে দিলেও এটি শাসকের মুখ বদলে সূচনা বলে দাবি বিরোধী শিবিরের। অনেকে আবার মহারাষ্ট্রের মতো এ রাজ্যের শাসক দলে ভাঙন ধরানোর জন্য বিজেপির শিণ্ডে তত্ত্বকে খাড়া করছেন।
পার্থ অনুব্রত কান্ড অস্বস্তি ফেলেছে রাজ্যের শাসক দলকে। সেই পরিস্থিতিতে অভিষেকের নেতৃত্বে নতুন তৃণমূল তৈরি করে দলের সংস্কার ঘটানো হচ্ছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তার মধ্যে এই নতুন হোর্ডিং উত্তর কলকাতায়। আর এই নতুন হোর্ডিয়ে লেখা আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিষেকের সেনাপতিত্বে তৃণমূল কংগ্রেস ছিল আছে থাকবে। যারা এই হোর্ডিংয়ের প্রচার করেছেন তারাই দাবি করেছেন দিদির বিকল্প কিছু নেই। তাই তিনি প্রধান। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন হিসেবে আজকে যেভাবে লড়ছেন সেটা ভালো লাগছে। আর এটাকেই আদি ও নব্যর লড়াই বলে দাবি করেছেন বিশ্লেষকদের একটা অংশ।
বামেরা অবশ্য দাবি করেছেন তাদের স্লোগান, কৃষি আমাদের ভিত্তি আর শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ এর নকল করে তৃণমূলের এই নতুন হোর্ডিং পুরাতনই ভিত্তি নতুনই ভবিষ্যৎ।

