বাঘ বনের নিরাপত্তায় বক্সায় এবার মহিলা বনকর্মীদের নিয়ে স্পেশাল ফোর্স

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার ৩০ ডিসেম্বর: বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে এবার বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় মহিলা বনকর্মীদের নিয়ে বিশেষ দল তৈরি করা হল। বাঘ বনের পশ্চিম ডিভিশনের প্রায় সিংহভাগেই মহিলা কর্মীদের নিয়ে গঠিত এই স্পেশাল ফোর্স গোটা শীতের মরসুম কাজ করবে। গভীর জঙ্গল ও লাগোয়া চা-বাগান ও বনবস্তী এলাকায় নজরদারি করবে তারা। মঙ্গলবার থেকেই জঙ্গলে কাজ শুরু করেছেন মহিলা বনকর্মীরা।

ব্যাঘ্র প্রকল্পের পশ্চিম ডিভিশনের ডিএফডি উমর ইমাম জানান, “অবৈধভাবে জঙ্গলের কোর এলাকায় গাছ কাটা, মাছ ধরা সবকিছুর বিরুদ্ধে কাজ করবেন মহিলা কর্মীরা। বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষাই আমাদের প্রথম কাজ। জঙ্গলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কোনও কিছুর সঙ্গে আপোষ করা হবে না। আরও নিরাপত্তা বাড়ানো হবে জঙ্গলে।”

উল্লেখ্য, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প লাগোয়া বনবস্তীগুলিতে গত ৪ বছরে ধাপে ধাপে রেকর্ড পরিমান গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে এরপরও বছরে ৩৬৫ দিন জঙ্গলে স্থানীয়রা কেন জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করছেন? কত জ্বালানি কাঠ প্রয়োজন হয় একটি পরিবারের? উমর ইমাম বলেন,“শীতের মরসুমে অবৈধভাবে জঙ্গলে প্রবেশের প্রবনতা বেশি হয়। আমাদের মহিলা বনকর্মীরা এবার অবাঞ্ছিত অনুপ্রবেশ রুখতে টানা কাজ করবে।”

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে গভীর জঙ্গলে ঢুকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, মাছ ধরা নিয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব রাজাভাতখাওয়া রেঞ্জের গদাধর বিট এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, স্থানীয়রা সোমবার রাতে একদফা এবং মঙ্গলবার সকালে আরও এক দফা বনদফতরের অফিসে হামলা করে, অফিস ভাঙ্গচুর করে। স্থানীয়দের একটি অংশের অভিযোগ, বনকর্মীরা খারাপ ব্যবহার করছে। তারই প্রতিবাদে এদিন বিক্ষোভ চলছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশ বিক্ষোভে ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বনদপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে আসেন।

দুপুরের দিকে অবস্থা স্বাভাবিক হয় গদাধর এলাকায়। জানা গেছে, সোমবার গভীর জঙ্গলে একব্যক্তিকে ধরে বনকর্মীরা। যদিও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সেই ঘটনার পরিপেক্ষিতে স্থানীয়রা বনদপ্তরের অফিসে হামলা করে।এদিকে, বনকর্মীদের একাংশ অভিযোগ করেন হামলাকারীদের মধ্যে মদ্যপরাও ছিলেন। উমর ইমাম বলেন,“সরকারি সম্মত্তি নষ্ট হয়েছে। হামলা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করবো আমরা। বন ও বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হোক এমন কোনও কাজ বরদাস্ত করা হবে না। আমরা জঙ্গলকে নিরাপদ রাখছি। তবে যখনই নিরাপত্তা কঠোর হচ্ছে তখনই পাল্টা প্রত্যাঘাত আসছে বনকর্মীদের উপর।বনকর্মীদের মনোবল ঠিক রাখতে নিরাপত্তা আরও বাড়বে।ক্ষয় ক্ষতির হিসেব করা হচ্ছে। বনকর্মী ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তার দিকগুলি নিশ্চিত করছি আমরা।”

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানান, যেভাবে বক্সার জঙ্গলে কোর এলাকায় মানুষের পা পড়ছে তাতে জঙ্গলের আর যাই হোক ভাল হচ্ছে না। গভীর জঙ্গলে যে মহিলারা যান তাদের বিরুদ্ধে পুরুষ বনকর্মীরা সব সময় পদক্ষেপ নিতে পারে ননা। এবার মহিলা বনকর্মীরা সহজে সেই কাজটি করতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *